সেফটিপিন দিয়ে পুরুষাঙ্গে খোঁচা, ডেকে আনলেন বিপদ! বিরল অস্ত্রোপচার এই বাংলায়

কি ঘটেছিল?

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-02-22 at 7.47.23 PM

বনমালী ষন্নিগ্রাহী, বাঁকুড়া:ঠিকঠাক প্রস্রাব হচ্ছিল না দিনকয়েক ধরে। প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিটি ভেবেছিলেন, সেফটিপিন দিয়ে পুরুষাঙ্গে খোঁচা দিলে হয়তো কিছু সমাধান হতে পারে। আর তা করতে গিয়েই ডেকে এনেছিলেন বিপদ। 

মূত্রনালী বা ইউরেথ্রা-র একেবারে  ভেতরে পৌঁছে যায় সেফটিপিন। স্বাভাবিকভাবেই অসহ্য ব্যথা, যন্ত্রণা শুরু হয়। মহাবিপদের মধ্যে পড়েন মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ এলাকার ওই ব্যক্তি। ছুটে যান স্থানীয় দেপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দান। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এমার্জেন্সি থেকে ওই ব্যক্তিকে পাঠানো হয় সার্জারি বিভাগে। গত সপ্তাহের এই ঘটনায় সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় এক্স-রে সহ রোগীর প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দেন। হাতে এক্স-রে রিপোর্ট পেয়েই চক্ষু চড়কগাছ হয় চিকিৎসকদের।

ডঃ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মূত্রনালীর অত্যন্ত গভীরে 'মেমব্রেনাস ইউরেথ্রা' নামে (যার পরিসর মাত্র ১.২৫ সেমি) একটি জায়গায় আটকে ছিল ওই সেফটিপিন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর আমরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই।" এদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যালে ইউরেথ্রোস্কোপির সুযোগ নেই, তাই করা হয় ওপেন সার্জারি। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই অস্ত্রোপচার করেন ডঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সার্জারি বিভাগের টিম। ওপেন সার্জারিতে সাফল্য আসে। নিরাপদেই বেরিয়ে আসে ওই 'আন-সেফ' সেফটিপিন! শুক্রবার বিকেলে ডঃ চট্টোপাধ্যায় জানান, "অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বছর ৫০-র ওই ব্যক্তি। আমরা আগামী সপ্তাহেই ওঁকে ছেড়ে দেব।" তাঁর সংযোজন, "একেবারে বিরল না হলেও, এই ধরনের ঘটনা প্রায় বিরল বলা যেতে পারে!" কিন্তু, ওই জায়গায় কিভাবে ঢুকল সেফটিপিন? ডঃ চট্টোপাধ্যায় এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি, মুচকি হেসে জানিয়েছেন, "রোগীর কিছু বিষয় তো গোপন রাখতেই হয়!" যদিও, মেদিনীপুর গ্রামীণের ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে ঠিকঠাক প্রস্রাব হচ্ছিল না বলেই তিনি এই কাণ্ড বাঁধিয়ে বসেছিলেন।