নিজস্ব সংবাদদাতা: সাত শতাব্দী পুরোনো আশ্রমের আবর্জনা থেকে উদ্ধার একাধিক দুষ্প্রাপ্য, ঐতিহাসিক জিনিস। সংরক্ষণের উদ্যোগ আশ্রমের। অন্ডালের উখড়া গ্রামের মহন্ত অস্থল আশ্রমের সংগ্রহে রয়েছে সোনার জল দেওয়া ছবি সহ রামায়ণের দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি। এছাড়াও শের শাহয়ের সাক্ষর ও স্ট্যাম্প দেওয়া জমির দলিল। এই সব কিছুই উদ্ধার হয়েছে আশ্রমের জিনিসপত্রের আবর্জনার মধ্যে থেকে।
প্রায় ৭০০ বছর আগে উখড়া গ্রামে গড়ে ওঠে নিম্বাক আশ্রম। যা এলাকায় মহন্ত অস্তল আশ্রম নামে পরিচিত। আশ্রমে রাধা কৃষ্ণের পাশাপাশি অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তিও বিরাজমান। ঝুলন উৎসবের সময় ছাড়াও সারা বছর এই আশ্রমে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে।
/anm-bengali/media/media_files/2025/03/15/ONC9DQkNxITe56uxASoB.jpeg)
সম্প্রতি আশ্রমের আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ আশ্রমিকদের। আশ্রমের সংগ্রহে ছিল বেশকিছু প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য জিনিস। যার মধ্যে অন্যতম হল সোনার জল দিয়ে আঁকা ছবি সহ রামায়ণের সচিত্র পান্ডুলিপি। সম্প্রতি আশ্রম থেকেই সেটি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান আশ্রমের বর্তমান মহন্ত নারায়ণ শরণদেবজী।
উদ্ধার হওয়া পান্ডুলিপিটি অতি প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য বলে জানান তিনি। ভুজ্য পত্রের ওপর সংস্কৃত ভাষায় লেখা ১২০০ পাতার সচিত্র এই পান্ডুলিপিটি রামায়ণের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ বলে জানা যায়। রামায়ণের একাধিক ছবিও রয়েছে পান্ডুলিপিটিতে। তবে পান্ডুলিপির লেখক কে তা জানা যায়নি। ছবিগুলোর ওপর দেওয়া আছে সোনার জল। গোটা পান্ডুলিপিটি সোনার জরি দিয়ে বাঁধা। পান্ডুলিপিটি ৪০০ থেকে ৪৫০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে শুধু রামায়ণের পান্ডুলিপি নয় আরও বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য জিনিস সম্পতি উদ্ধার হয়েছে এই আশ্রমে বলে জানান মহন্ত নারায়ণ শরণদেবজী। যার মধ্যে অন্যতম হল আশ্রমকে দান করা সুরি সম্রাট শের শাহের জমির দলিল। প্রায় ৭০০ বছর আগে ভুজ্য পত্রের উপর ঝামানি (চাল পুড়িয়ে তৈরি করা কালি) কালিতে ফার্সি ভাষায় লেখা হয়েছিল দলিলটি। দলিলে রয়েছে শের শাহের আমলের সিলমোহর।
/anm-bengali/media/media_files/2025/03/15/0BhUEXUSRaTfm9hlCDiN.jpeg)
আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, তৎকালীন শের শাহের অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছিলেন আশ্রমের তৎকালীন মহন্ত প্রয়াত সবুরাম দেবাচার্যের শিষ্য দয়ারাম শরণ দেবাচার্য্য। কৃতজ্ঞতাবশত সম্রাট শের শাহ তখন আশ্রমকে বেশ কিছু জমি দান করেছিলেন। এটা তাঁরই দলিল বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও আশ্রমে আবিষ্কৃত হয়েছে রানী ভিক্টোরিয়ার লেখা একটি দুষ্প্রাপ্য চিঠি। চিঠিটি পোস্টকার্ডের ওপর লেখা। লেখা হয়েছিল ১২৯৮ সালে।
সম্প্রতি আশ্রমের আবর্জনা থেকে এই দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি উদ্ধার হয়েছে। অনাদরে সেগুলির ক্ষতিও হয়েছে। উদ্ধারের পর দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন মহন্তজী। তিনি জানান, “রামায়ণের পান্ডুলিপি, শের শাহের জমির দলিল, মহারানী ভিক্টোরিয়ার চিঠি এগুলি বিশেষ তরল (সেলিকা জেল) দিয়ে রাখা হবে। সেগুলিকে সংরক্ষণ করা হবে”।