কৃষকদের থেকে আলু কিনছে না ব্যবসায়ীরা, আবার বৃষ্টির পূর্বাভাসে জোড়াফলায় বিদ্ধ কৃষকরা!

আবহাওয়া দপ্তরের তরফে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়ায় জোড়াফলায় বিদ্ধ কৃষকরা।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-02-19 at 12.42.34 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: আলু চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন না কৃষকেরা। আলু চাষের গড় হিসেবে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ও চন্দ্রকোনা। বর্তমানে চন্দ্রকোনায় মাঠ থেকে উঠতে শুরু করেছে পোখরাজ আলু, কিন্তু মাঠের আলু মাঠেই পড়ে থাকছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় ব্যবসায়ীরা আসছেন না মাঠে, আলু কেনায় অনীহা ব্যবসায়ীদের, দাবি কৃষকদের। আলু চাষে মোটা টাকা খরচ করেও আখেরে লাভ দেখছেন না কৃষকেরা।

কৃষকদের দাবি,চড়া দামে রাসায়নিক সার,আলু বীজ কিনে বিঘা পিছু আলু চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এই বছর আলু চাষে বিলম্বও হয়েছে। বর্তমানে নতুন পোখরাজ আলুর মূল্য ৫০০ টাকা কুইন্টাল। এক বস্তা আলুর দাম ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা(এক বস্তায় ৫০ কেজি)।বর্তমানে যা আলুর দাম সেই টাকায় আলু বিক্রি করে চাষের খরচ উঠবে না এমনটাই জানাচ্ছেন কৃষকরা। প্রতি বছর নতুন আলুর বস্তা খুলে মাঠেই ব্যবসায়ীদের বিক্রি করে দেয় অধিকাংশ কৃষক। কিন্তু এই বছর আলু ব্যবসায়ীদের দেখা নেই। আলু তোলা শুরু হলেও মাঠেই গাদ দেওয়া থাকছে। এদিকে আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে বৃষ্টি হলে মাঠে গাদ দেওয়া আলু পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে কৃষকদের।

শীতের আমেজ নেই, মাঝে মধ্যে ঘনকুয়াশা সাথে দুপুরের দিকে চড়া রোদ ও গরম অনুভুত হওয়ায় মাটির নীচে আলুর পচন ধরছে। জমিতে আলু খুলতে গিয়ে নজরে আসছে কৃষকদের। মাঠ থেকে আলু কেনায় কেন অনীহা ব্যবসায়ীদের? ব্যবসায়ী থেকে কৃষকরাও জানাচ্ছেন যে এই বছর ভিন রাজ্যে আলু রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় হিমঘরে মজুত আলু মূলত ভিন রাজ্যে যায়। এই জেলার আলু কলকাতা বা অন্য জেলায় কমই যায়। বর্ডার বন্ধ থাকায় এখনও জেলার হিমঘরগুলিতে মজুত রয়েছে লক্ষধিক পুরানো আলু। হিমঘরে মজুত আলু নিয়ে চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। তার উপর মাঠে নতুন আলু উঠতে শুরু করায় ব্যবসায়ীরা এই মুহুর্তে আলু কেনায় অনীহা দেখাচ্ছে। 

পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সহ সভাপতি মুকুল ঘোষ বলেন, 'বর্ডার ঘিরে দেওয়ার কারণে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এখন কৃষকদের উপরেও। ব্যবসায়ীরাও অনীহা দেখাচ্ছে আলুর প্রতি। পুরনো আলু পড়ে রয়েছে যা বিক্রি করতে না পেরে এমনিতেই লোকসানে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। তারা এই মুহূর্তে কি করে নতুন আলু কেনায় আগ্রহ দেখাবে? যেসব কৃষক ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা অগ্রিম নিয়ে চাষ করেছিল তারাই এখন নতুন আলু তুলে সেই ব্যবসায়ীকে দিয়ে দিচ্ছে"। 

চাষীদের চাষের খরচ তুলতে গেলে আলুর বর্তমান মুল্য ৫০০ নয় কুইন্টাল প্রতি ৮০০ টাকা হলেও মাথা বাঁচবে নাহলে ভরাডুবি হবে কৃষকদের। তবে এই মুহুর্তে মাঠ থেকে জলদি পোখরাজ আলু তোলা শুরু হয়েছে। জ্যোতি আলু মাঠ থেকে উঠতে এখনও অনেকটা সময় রয়েছে।