নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: সরকারি প্রকল্পে বাংলার আবাস যোজনার বাড়ি তৈরীর প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও শুরু হল না বাড়ি তৈরীর কাজ। কারণ সরকারি পাট্টার কাগজ হাতে থাকলেও মেলেনি জায়গা। জমি জটে আটকে গেল আবাসের বাড়ি নির্মাণের কাজ। নিজের নির্দিষ্ট পাট্টার জায়গা চিহ্নিত করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ স্বামীহারা মহিলা। তড়িঘড়ি ভূমি দপ্তরকে সবরকম সহযোগিতার নির্দেশ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। মহিলাকে ডেকে পাঠিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাবল্লভপুর এলাকার ঘটনা। রাধাবল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা নমিতা কোটালের দাবি, সরকারি বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা তিনি পেয়েছেন। এদিকে বাড়ি তৈরীর জন্য তিনি তার থাকার ভাঙাচোরা মাটির বাড়ির বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে আবাসের বাড়ি করতে গেলেই দেখা দেয় বিপত্তি। কারণ বর্তমানে তারা যে যায়গায় বসবাস করছেন সেই জায়গা পিডাব্লিউডি- এর অধীন। আবাসের বাড়ি শুরুর করার জন্য বাড়ি তৈরির মালপত্র পড়ে গেলেও বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি ভূমিহীন হওয়ার কারণে কয়েক বছর আগে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি প্রকল্পের নিজগৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে পাট্টা পেয়েছিলেন। অভিযোগ, সমস্ত কাগজপত্র থেকে জায়গার রেকর্ড নমিতা দেবীর নামে থাকলেও সরকারিভাবে তাকে সেই নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিতকরণ করে দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফ থেকে আর এতেই বিপাকে পড়েছেন। নমিতা দেবীর অভিযোগ, একাধিকবার তার নিজের জায়গা পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এতদিন রাস্তার ধারে পিডাব্লিউডি- এর জায়গায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন ওই মহিলা। ভূমিহীন হওয়ায় সরকারি পাট্টাও পেয়েছেন। পাট্টার জায়গা চিহ্নিত করে পাট্টা প্রাপককে বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের। এত বছর পরও কেন ওই মহিলাকে তার পাট্টার জায়গা চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের।
পঞ্চায়েত সমিতির দ্বারস্থ হলে এ বিষয়ে চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ মহিলার পাশে দাঁড়িয়ে তৎক্ষনাৎ ফোন করে ব্লকের ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে বিষয়টি যাতে দ্রুত সমাধান করে মহিলা বাড়ির কাজ শুরু করতে পারেন তার নির্দেশ দেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, "আমার কাছে এই প্রথম ওই মহিলা এসেছেন তার সমস্যা নিয়ে।আমি বিডিও ও বিএলএলআরও -কে বলেছি দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে দিতে। ওই মহিলা পাট্টা পেয়েছেন অনেক বছর হয়ে গেছে, হয়তো জায়গা পেয়েছিলেন সেখানে যাননি এমনও হতে পারে। তবে সমস্যা যাই হোক দ্রুত সমাধান করা হবে"। চন্দ্রকোনা-২ নম্বর ব্লকের বি এল এল আর ও সব্যসাচী মন্ডল বলেন, "বিষয়টি সবেমাত্র শুনলাম।দীর্ঘদিনের পুরানো পাট্টা, হয়তো উনি দখল নেননি। আমরা বিষয়টি দেখছি যাতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যত দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়"। এদিকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মহিলাকে নাকি চাপ দেওয়া হচ্ছে সরকারি বাড়ি পেয়েও কেন এখনও কাজ শুরু করেননি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাড়ি তৈরির জন্য দুই কিস্তিতে টাকা মিলবে ধাপে ধাপে। কিন্তু জমি জটে এখনও বাড়ি তৈরি কাজ শুরু না হওয়ায় চাপে নমিতা দেবী। এখন দেখার বিষয় কবে নমিতা দেবী তার সরকারি পাট্টার জায়গা পেয়ে সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন।