পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসের বাড়ি পাওয়ার অভিযোগ! সমীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

এবার নিশানায় কে?

author-image
Anusmita Bhattacharya
আপডেট করা হয়েছে
New Update
edit abas jogana.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: চন্দ্রকোনার পর এবার দাসপুর। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসের বাড়ি পাওয়ার অভিযোগকে ঘিরে শোরগোল। পেল্লায় ২ তলা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম। প্রথম কিস্তির টাকা পেতেই শুরু হয়েছে বাড়ি যা নিয়ে সরব এলাকার মানুষজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা। সমীক্ষা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের সরবেড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মসাগর গ্রামের। জানা যায়,ওই গ্রামের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাসের নাম রয়েছে রাজ্য সরকারের দেওয়া বাংলার বাড়ি প্রকল্প। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকাও ঢুকেছে একাউন্টে। টাকা ঢুকতেই শুরু করেছেন বাড়ি।আর এই নিয়েই সরব হয়েছেন প্রতিবেশী থেকে এলাকার মানুষজন। এমনকি ওই ব্যক্তির দোতলা পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন উপভোক্তার ভাইও। এলাকার মানুষজন থেকে প্রতিবেশীদের দাবি, রবীন্দ্রনাথ দাসের দ্বিতল পাকার বাড়ি থাকা সত্ত্বেও প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা তিনি পেয়েছেন যা দিয়ে বর্তমানে তিনি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। অথচ গ্রামে যারা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য তাদের তালিকায় নাম নেই, তারা বঞ্চিত।

রবীন্দ্রনাথ দাস অবশ্য বলেন,"ওই দুই তলা পাকাবাড়িটি আমার ছেলে মানিক দাসের। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। ছেলে নিজে বাড়ি করেছে আমরা মাটির বাড়িতে থাকতাম। সেই মাটির বাড়িটি ভেঙে আবাস যোজনার টাকা পেয়ে বাড়ি করছি।" রবীন্দ্রনাথ দাসের ভাই শম্ভু দাস দাদার সরকারি বাড়ি পাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন। দাদার কথা যে সত্য না তা তিনি প্রকাশ্য ক্যামেরায় স্বীকার করেন। তার বক্তব্য তার দাদার সঙ্গে তার ছেলের কিছুই গন্ডগোল নেই। রবীন্দ্রনাথ দাস ও তার স্ত্রী ছেলের সাথে পাকাবাড়িতে থাকে। ছেলের বিয়ে হয়নি। ছেলে ভিন্ন কি করে হয়। মাটির বাড়ি ভেঙে তো পাকাবাড়িতে থাকতে হচ্ছে নাহলে কোথায় থাকছে? অথচ তার মাটির বাড়ি তিনি বাড়ি পাননি।

এই বিষয়ে সরবেড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সোমা দোলুই সমীক্ষার সাথে যুক্ত আধিকারিক ও কর্মীদের উপর দায় ঠেলে বিষয় সম্পর্কে এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, "অফিসারেরা  সার্ভে করেছেন। আমি কিছু জানিনা। সার্ভের সময় আমাদের ডাকা হয়নি। কে বাড়ি পেয়েছে কার একাউন্টে টাকা ঢুকেছে আমার জানা নেই।" গত কয়েকদিন আগেই চন্দ্রকোনার খুড়শী গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতির পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়া ও প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকা নিয়ে সরব হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশ। তা নিয়ে জলঘোলা ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্য আসায় জোর বিতর্ক শুরু হয়। তড়িঘড়ি পরদিনই বিডিও'র নির্দেশে টাকা ফেরান তৃণমূল নেতা। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ঘাটাল মহকুমারই দাসপুরে দোতলা পাকা বাড়ির মালিকের বাংলার বাড়ি প্রকল্পের তালিকায় নাম এবং প্রথম কিস্তির টাকা একাউন্টে ঢুকে গিয়ে বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসতেই ফের একবার প্রশ্ন উঠছে সরকারি আধিকারিক কর্মীদের দিয়ে আবাসের সমীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যাতে গরীব মানুষই স্বচ্ছতার সাথে বাড়ি পায় এবং সঠিক ভাবে বাড়ি তৈরি করতে পারে তা নিয়ে একাধিক বার কড়া বার্তা দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও এহেন অভিযোগ সামনে আসায় সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দায় কাদের?