বাউরী সমাজের প্রতি বঞ্চনা! বিক্ষোভে চড়ছে পারদ

বাউরী সমাজের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রায় সব বিষয়েই বঞ্চিত রেখেছে বাউরী সম্প্রদায়ের লোকেদের। কারখানার গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানোয় কারখানার স্থায়ী কর্মীরা কারখানায় ঢুকতে না পেরে বিক্ষোভকারীদের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
bauri protest

বাউরী সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ

হরি ঘোষ, লাউদোহা : শুক্রবার সকাল থেকেই পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের ঝাঁঝড়া গ্রামের অদূরে অবস্থিত একটি বেসরকারি কারখানার গেট বন্ধ করে বিক্ষোভে সামিল হল বাউরী সমাজের লোকেরা। বাউরী সমাজের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রায় সব বিষয়েই বঞ্চিত রেখেছে বাউরী সম্প্রদায়ের লোকেদের । এছাড়াও এই এলাকায় কারখানা তৈরি হওয়ার সময়  কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিল এলাকার প্রত্যেক পাড়া থেকে কারখানার কাজের জন্য লোক নেওয়া হবে কিন্তু, কাজ পায়নি বাউরী সমাজের লোকেরা, এমনই অভিযোগ বাউরী সম্প্রদায়ের লোকেদের। শুক্রবার সকাল সাতটা নাগাদ বাউরী সমাজের প্রচুর মহিলা ও পুরুষ মিছিল করে এসে গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, কারখানার কারণে এলাকায় দূষণ হচ্ছে, বাড়ছে রোগ ব্যাধি কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বাইরের থেকে লোক এনে কাজ দিচ্ছে। এলাকার মানুষ পাচ্ছেন না কাজ। যে সকল লোক কাজ পাচ্ছেন তার মধ্যে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাউরী সমাজের লোকেরা । কারখানার গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ  দেখানোয় কারখানার স্থায়ী কর্মীরা কারখানায় ঢুকতে না পেরে বিক্ষোভকারীদের সাথে বচায় জড়িয়ে পড়েন। বচসা হাতাহাতিতে গিয়ে পৌঁছায়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে লাউ দোহার ফরিদপুর থানার পুলিশ । পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

 ঘটনা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ মজুমদার জানান, 'হঠাৎ করেই হচ্ছে এই ধরনের বিক্ষোভ। বাউরী সমাজের লোকেরা এর আগে তার কাছে কোনো রকম আবেদন জানায়নি। তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ সবসময় এলাকার মানুষের সুযোগ সুবিধার কথা ভাবে । এছাড়াও তিনি বলেন বাউরী সমাজের কি দাবি আছে, অবশ্যই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। প্রয়োজনে কারখানা কর্তৃপক্ষ সদর্থক পদক্ষেপ নেবে।

বাউরী সমাজের এই বিক্ষোভে সামিল হন বাউরি সমাজের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ বাউরী। তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ শুধু বাইরের লোকেদের এই সুযোগ দিচ্ছে। স্থানীয় বাউল সমাজের লোকেরা এই কারখানা থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি তিনি এও বলেন তাদের দাবি একটাই এলাকায় জল আলো এবং বাউল সমাজের বেকার যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে কর্তৃপক্ষকে । বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের জেরে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কারখানায় ঢুকতে না পেরে কারখানার স্থায়ী কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকায় উত্তেজনাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় । পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। অবশেষে ঘটনাস্থলে আসেন দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুজিত মুখার্জি। তিনি বাউরী সমাজের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সুজিত বাবু জানান, এলাকায় মানুষের কষ্ট রয়েছে তবে এইভাবে আর কারখানা গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ ঠিক নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে। সভাপতির আশ্বাসে অবশেষে বিক্ষোভ তুলে নেয় বাউরি সমাজের লোকেরা ।