নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরে পটে মহাভারতের কাহিনী চিত্র। আবেদ চিত্রকর দম্পতির হাতের জাদুতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহাভারতের কাহিনী। শুধু রাজ্যে নয় দেশে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পটচিত্রের জন্য পুরস্কৃত হয়েছে এই আবেগ চিত্রকর। শুধু পটচিত্র নয়, পটচিত্রের সাথে সাথে বিভিন্ন গান গেয়ে পট চিত্রের কাহিনী বর্ণনা করেছেন তারা।
পটচিত্র একটি অতি প্রাচীন লোকশিল্প। প্রাচীনকালে কাপড় বা কাগজের উপর দেবদেবীর প্রচলিত কাহিনীর ছবি লিখে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান গেয়ে পট দেখাতেন কিছু মানুষ। এটাই তাদের একমাত্র জীবিকা। লোকে তাদের বলতেন 'পটুয়া'। তারা 'পটিদার' নামেও অনেকাংশে পরিচিত ছিলেন। তাদের বেশির ভাগের পদবী সাধারণত ‘চিত্রকর’।
পটচিত্র নিয়ে বিভিন্ন গবেষক দল বারেবারে এসেছে এই পটচিত্রের গ্রামে। শুধু পট চিত্র অঙ্কন নয়, তার সাথে সাথে বিভিন্ন সামাজিক সর্তকতামূলক বার্তা দেওয়া ও সচেতনতার বার্তা দেওয়ার জন্য বারে বারে প্রয়াসী হয়েছে এই পটচিত্রকাররা। মহাভারতের বিভিন্ন চরিত্রগুলির কাহিনীফুটিয়ে তুলেছেন তারা পটচিত্রের তুলির টানে। ধর্মীয় ভাবনা, ঐতিহ্য ও শিল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে পটচিত্রের আঙ্গিকে।
মহাভারত ও রামায়ণ উপখ্যান থেকে চরিত্র খুঁজে নিয়ে উজ্জ্বল রঙে আঁকা হতো। পটে আঁকা হতো দুর্গাপট ও লক্ষ্মীপট। মাটির প্রতিমা গড়ে পূজা করার সাধ্য ছিল অল্প লোকের। তারা পটের আশ্রয়ে দেব-দেবীর পূজা করত। রঙিন দুর্গোৎসব সম্ভব না হলেও, শতভাগ ভক্তি নিয়েই পূজা হতো দুর্গাপটের। একইভাবে আঁকা ছবি সামনে রেখে দেবী লক্ষ্মীর অর্চনা করা হতো। তবে বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী শিল্পের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে।