নিজস্ব সংবাদদাতা: মেদিনীপুর থেকে হাওড়া গামী ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন এক বৃদ্ধা। লোকাল ট্রেন তখন চলতে শুরু করে দিয়েছে, আর তাতেই কোনক্রমে ওঠার চেষ্টা করছিলেন বৃদ্ধা। কিন্তু আচমকায় ট্রেনের গতি বেড়ে যেতেই নিয়ন্ত্রণ হারান বৃদ্ধা! চাকার তলায় পড়েই যাচ্ছিলেন, কিন্তু ঠিক তখনই ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে ধরলেন কেউ। আর অল্পের জন্যে প্রাণে রক্ষা পেলেন সেই বৃদ্ধা। এমনই ঘটনা ঘটেছে মেদিনীপুর স্টেশনে।
সাক্ষাৎ ঈশ্বরের দূত এর মত ছুটে আসেন দূরে কর্তব্যরত রেলওয়ে লেডি কনস্টেবল। কোল পাঁজা করে দীর্ঘ ছুটে বৃদ্ধাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ছিনিয়ে আনেন তিনি। প্রাণে বেঁচে যান ওই মহিলা। পুরো ঘটনার মুহূর্ত ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। আর তাতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়।
এদিন মেদিনীপুর হাওড়া ডাউন লোকাল ট্রেন এ করে কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ওই বৃদ্ধা। ট্রেন তখন চালু করে দিয়েছিল এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে। ওই বৃদ্ধা প্রাণপণে ওই ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। তিনি যতই চেষ্টা করছিলেন ট্রেনের গতিও ততটাই বাড়ছিল। কিন্তু তিনি কোনোভাবে ট্রেনের বগির হাতল ধরে ফেলেছিলেন। শেষে ছুটতে না পেরে হাতল ধরা অবস্থাতেই ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন ওই বৃদ্ধা। তাতে হয়তো চলন্ত ট্রেনের ফাঁকেই পড়ে যেতেন তিনি। আর তাতে মৃত্যু একপ্রকার নিশ্চিত।
এমন সময় দূর থেকে বিষয়টা বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী লেডি কনস্টেবল এস বিশ্বাস। প্রচন্ড গতিতে ছুটতে ছুটতে এসে একেবারে কোলপাঁজা করে ধরে নেন বৃদ্ধাকে। কোলে করে কোনোভাবে ওই হাতল থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন বৃদ্ধাকে। ওই অবস্থাতেই লেডি কনস্টেবল বৃদ্ধাকে ধরে ছুটতে থাকেন। অনেক পরে বৃদ্ধাকে ট্রেন থেকে ছাড়িয়ে নিতে সক্ষম হন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ওই বৃদ্ধা। দ্রুত বাকিরাও ছুটে এসে উদ্ধারের চেষ্টা করেন ততক্ষণে।
ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী স্টেশনের অন্যান্যরা ও রেলওয়ে কর্মী আধিকারিক সকলেই সাক্ষাৎ ঈশ্বরের দূত বলেই মনে করছেন ওই লেডি কনস্টেবলকে। তার তৎপরতাতেই প্রাণ ফিরে পেলেন ওই বৃদ্ধা। লেডি কনস্টেবল এস বিশ্বাসকে এর জন্য অনেকটাই ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্টেশনে উপস্থিত অন্যান্য যাত্রীরা। সাবাশী কুড়িয়েছেন রেলওয়ে আধিকারিকদের কাছ থেকেও।
এর আগে এই ধরনের প্রাণে বাঁচানোর ঘটনায় বেশ কয়েকবার দেখা গিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ কর্মীদের তৎপরতা। তারা সম্মানিত হয়েছেন রেলকর্তাদের কাছে। এবার সম্ভবত সেই তালিকায় স্থান পেলেন দুর্ধর্ষ সাহসী কনস্টেবল এস বিশ্বাস।