নিজস্ব সংবাদদাতা: সাইকেলে করেন আসা-যাওয়া। থাকেন টালির ছাউনী দেওয়া মাটির বাড়িতে। রাতে চাটাইয়ের উপর বিছানা পেতে ঘুম। চোখ খুললেই টালির ফুটো দিয়ে দেখেন পূর্ণিমার চাঁদও। তবুও আবেদন করেননি আবাসে। ইনিই কাঁকসার বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মীমণি টুডু।
কাঁকসার বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতের জাটগড়িয়া গ্রামের জরাজীর্ণ বাড়িতে থাকেন বছর ২৬-এর লক্ষ্মীমণি টুডু। প্রতিদিন সূর্যের উদয় হলেই মায়ের সাথে দিনমজুরের কাজে যান। ১০টা বাজলেই সাইকেল নিয়ে ৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যেতে যেতে শোনেন সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা। পঞ্চায়েত কার্যালয়ে গিয়ে সেগুলি সমাধানের চেষ্টাও করেন। মানুষকে দিনভর পরিষেবা দেন। বিকেলে আবার সাইকেল নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। জরাজীর্ণ টালির ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়িতে ধরেছে ফাটল। রয়েছে টালির ছাউনিতে অজস্র ফুটো। নেই খাটও। তাই চাটাইয়ের ওপর বিছানা পেতেই ঘুমান রাতে। তারপরেও আবাস যোজনার বাড়িতে লেখান নি নাম।
কারণ তিনি চান আগে এলাকার মানুষ আবাস যোজনার সুবিধা পান। শেষে তিনি নিতে চান পরিষেবা। রোজকার বলতে দিনমজুর। মায়ের সাথে দিনমজুর কাজ করে যেটুকু রোজগার হয় তাতেই চলে তাদের সংসার। প্রধান হয়েও এভাবেই যে সাদামাটা জীবন যাপন করতে চান তিনি।
/anm-bengali/media/media_files/2025/02/18/HNd4Q0ZPkQrrHcJTkGnc.png)
পঞ্চায়েতে পরিষেবা পেয়ে খুশি হয়ে গোপীনাথ বাস্কে বলেন, “আমরা এরকমই প্রধান চেয়েছিলাম। নিজে কষ্ট করে তিন কিলোমিটার দূর থেকে সাইকেল চালিয়ে পঞ্চায়েতে আসেন। আমাদের কোনদিন পরিষেবা নিতে এসে ঘুরে যেতে হয়নি। আগামী দিনে সৎভাবেই যাতে এগিয়ে যায় প্রধান আমরা সেটাই চাই”।
এদিকে প্রধান লক্ষ্মীমণি টুড়ু বলেন, “আমাদের পাকা বাড়ি নেই। কষ্ট করেই থাকি মাটির বাড়িতে। কষ্ট হয় সাইকেল নিয়ে পঞ্চায়েতে যেতে কিন্তু এইভাবেই আমি থাকতে চাই। আমার কাছে যে যা সমস্যার নিয়ে আসেন আমি দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করি। সবাইকে পরিষেবা দেওয়ার পর আমি নিজে নিতে চাই”।
/anm-bengali/media/media_files/2025/02/18/eYBQPJo3GUbLP8efUUtI.png)
প্রধানের এই ভূমিকাকে তারিফ করেছে সমাজের সব মহলই।