নিজস্ব সংবাদদাতা: জলপাইগুড়ির এক মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে সাত মাস আগে আলিপুরদুয়ার মহিলা থানা উদ্ধার করে। রাতেই বাবার কাছে খবর যায় মেয়ে উদ্ধারের। পরের দিন সকালে মেয়েকে নিতে থানায় পৌঁছলে পুলিশ জানায়, রাতেই আপনার মেয়েকে বাসে তুলে দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে কোনো সুরাহা না পেয়ে অবশেষে লিগ্যাল রাইটস প্রোটেকশন অর্গানাইজেশন এর সহযোগিতায় গরীব ভ্যান চালকের পরিবার হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। ২৬ শে নভেম্বর উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসারদের দিয়ে স্পেশাল টিম তৈরী করে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলেন জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার পুলিশ সুপারকে।
জলপাইগুড়ির কোতয়ালী থানা জেনারেল ডায়েরির নম্বর দেয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার। কোনো সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ গরীব পরিবারের। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালী থানা, আলিপুরদুয়ার থানা ও আলিপুরদুয়ার এর মহিলা থানার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।
সাত মাস থেকে আজও ঘরে ফেরেনি রাখি রায়, ঘটনা প্রসঙ্গে নিখোঁজ মানসিক ভারসাম্যহীন রাখি রায়ের দুঃস্থ অসহায় ভ্যান চালক বাবা পিন্টু রায় চোখে জল মুছে এদিন বলেন, “সাত মাস আগে মেয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। আমরা কাজে তখন বাইরে ছিলাম সেই থেকে অনেক জায়গায় খোঁজ করি। কিন্তু পাইনি মেয়েকে। এরপর হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার থানা থেকে আমাদের ফোন করে বলা হয় আপনার মেয়েকে পাওয়া গেছে নিয়ে যান”।
অপরদিকে এই দুঃস্থ অসহায় মানুষটির পাশে দাঁড়িয়েছে লিগ্যাল রাইটস প্রটেক্টসন অর্গানাইজেশন নামের একটি স্বেচ্ছা সেবি সংগঠন। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভূমিকা, কর্তব্যে পালনে গাফিলতি সহ একাধিক বিষয় নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করে।
এই প্রসঙ্গে মামলাকারি পক্ষের আইনজীবী অতিন্দ্র চৌধুরী জানান, ‘গত ২৬ শে নভেম্বর মামলাটি সার্কিট বেঞ্চের দুই বিচারপতি সম্পা সরকার এবং পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ দুই বিচারপতি। এরপরেই দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্যে নির্দেশ জারী করে অবিলম্বে এই ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের কথা বলেন। আমরা আশা করছি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই আদেশের পর নিখোঁজ রাখি রায়ের ঘটনার ভালো একটি ফল বেড়িয়ে আসবে’।
অপরদিকে এই মামলা প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি স্থিত কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের সরকারী আইনজীবি তথা এডিশনাল এডভোকেট জেনারেল, জয়জিৎ চৌধুরী জানান, ‘আলিপুরদুয়ার জেলার পিংক পুলিস মেয়েটিকে উদ্ধার করে ছিলো, তবে মেয়েটি পুলিশকে জানায় কিছু টাকা পেলে সে নিজেই বাড়ি চলে যেতে পারবে, এর পর থেকেই মেয়েটি নিখোঁজ বলে দাবি পরিবারের, মঙ্গলবার এই মামলায় ডিভিসন বেঞ্চের দুই বিচারপতির সম্পা সরকার এবং পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ দল সিট গঠন করে দ্রুত নিখোজ মেয়েটিকে খুঁজে বের করার’।