নিজস্ব সংবাদদাতা: ভিন রাজ্যের এক সাধু এসে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই দেবীকে। তারপর থেকে বামাক্ষ্যাপার উত্তরসূরিদের হাতেই পুজিত হন দেবী। তখন রায়গঞ্জ বলে কোন জনপদ ছিল না পাস দিয়ে বয়ে যেত কুলিক নদী। নানান ইতিহাসের সাক্ষী রয়েছে জঙ্গলে ঘেরা এই কুলিক কালী মন্দির।
মন্দির নিয়ে শোনা যায় নানান প্রচারিত কথা। বহুকাল আগে পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে এক তান্ত্রিক এসেছিলেন। তবে পাঞ্জাব থেকে উদ্দেশ্যহীনভাবে তিনি আসেননি এখানে বরং পেয়েছিলেন মায়ের স্বপ্নাদেশ। সেই তান্ত্রিক এসে মায়ের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বট গাছের নিচে পঞ্চমুন্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সে সময় মায়ের ছিল না কোন বিগ্রহ। শোনা যায় ওই তান্ত্রিকের অবর্তমানে ডাকাত দল আসতো। তারা মায়ের আসনেই করতেন পুজো।
বৃহদাকার এই কুলিক নদী দিয়ে সেই সময় বড় বড় বজরা বাণিজ্য করতে যেত। ফেরি করতে যাওয়ার সময় ধনী ব্যবসায়ীরা মায়ের পূজো করতেন। পরে ১৮০৮ সাল নাগাদ অবিভক্ত দিনাজপুরের মহারাজা তারকনাথ চৌধুরী মায়ের স্বপ্নদেশ পেয়ে এখানে একটি মন্দির তৈরি করেন। বামাক্ষ্যাপার উত্তরসূরী জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় এই পুজোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বেনারস থেকে কষ্টিপাথরের বিগ্রহ এনে তিনি পুজো করতে শুরু করেন। প্রাচীনকাল থেকে কয়েক পুরুষ ধরে বামদেবের উত্তরসূরীরাই এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়-এর তিরোধান হওয়ার পর তার তুতভাই এই পুজো শুরু করেন।
শুধু রায়গঞ্জ নয় পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা এমনকি বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু ভক্তরা আসেন। দেবীকে আর মাছ এবং বোয়াল মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। বর্তমানে সাধারণ ভক্তরা মিলেই মায়ের পূজো করেন। আনন্দময়ী মায়ের নানান অলৌকিক কাহিনী আজও শিহরণ যোগায় ভক্তদের মনে।