হরি ঘোষ, দুর্গাপুর : রেলের উন্নয়ন হোক অসুবিধে নেই কিন্তু পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নয় তাহলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গতকাল দুর্গাপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড সহ বেশ কিছু এলাকায় রেল কর্তৃপক্ষ আজ শেষ সময়সীমা দিয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে, প্রতিটা বাড়ির দেওয়ালে ক্রস সাইন করে দিয়ে যায়। আর এরপরই দুর্গাপুর নগর নিগমের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের আম্বেদকর কলোনি, গোপীনাথপুর, বীরভানপুর মৌজা সহ বেশ কিছু ওয়ার্ডের মানুষ প্রতিবাদে সরব হন। দেওয়ালে দেওয়ালে পড়ে পোস্টার। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে রেলের কর্তারা আম্বেদকর কলোনিতে এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও ভিড় বাড়তে থাকে। ছুটে আসেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই ও জেলা বিজেপির সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি জেলা নেতৃত্ব প্রশ্ন তোলেন কেন আসানসোল ডিআরএম অফিসে গত বছর ডিসেম্বর মাসে আলোচনা হওয়ার পরও রেল কর্তৃপক্ষ সোমবার উচ্ছেদের মাইকিং করতে গেলো? রেলের কর্তারা ক্ষোভের মুখে পড়েন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই ও জেলা বিজেপির সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কেউ কুড়ি, কেউ পঞ্চাশ বছর ধরে বসবাস করছেন, সরকারকে জল কর থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ বিল সবই দিচ্ছেন, আজ কিনা তাদেরকেই পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করে দিতে চাইছে রেল এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ডানকুনি থেকে লুধিয়ানা পর্যন্ত ফ্রেড করিডরের কাজ চলেছে যার জন্য দরকার জমি। স্থানীয়দের বক্তব্য আমরা পুনর্বাসন পেলেই সরে যাবো কিন্তু তার আগে উচ্ছেদ চলবে না। আজ আম্বেদকর কলোনিতে রেলের কর্তারা এলে পুনর্বাসনের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। রেল কর্তৃপক্ষ চিন্তার কোনো কারণ নেই বললেও তাতে আস্থা রাখতে পারছেন না দুর্গাপুরের বেশ কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। রেল বুধবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে বলেছে, আর এই কাজ যদি শুরু হয় তাহলে বীরভানপুর, গোপীনাথপুর, অঙ্গদপুর সহ প্রায় কম বেশী হাজার তিনেক মানুষ মাথার ছাদ হারাবেন। এই শীতে তারা কোথায় যাবেন সেই প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা। কোনোভাবেই পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ মানা হবে না সাফ জানিয়ে দেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই ওঁ জেলা বিজেপির সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ রাজ্যের নয় ওটা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র আর রেল বুঝবে দাবি তৃণমূলের।
এখন দেখার বিষয় বুধবার থেকে রেল উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কিনা, আর যদি করে তাহলে রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকা কি হয়। কিন্তু সাত সতেরোর এই জটিল অঙ্কে এখন বিপাকে পড়েছেন অসহায় এই মানুষগুলো।