প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জের, আলু চাষ পিছলো এক মাস, বিপাকে কৃষকরা

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় অপরদিকে কৃষিজাত দ্রব্যর কালোবাজারি ও চড়া দামে বিধ্বস্ত কৃষকরা।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2024-11-11 at 14.54.36

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ধান চাষে। মাঠে এখনও পড়ে রয়েছে ধান, তা তোলার কাজ চলছে। এর জেরে প্রায় এক মাস পিছিয়ে গেছে আলু চাষের সময়। ধান তোলার পাশাপাশি চন্দ্রকোনায় শুরু হয়েছে আলু চাষ। ধানের পর আলু চাষ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায় ধান ও আলু চাষ প্রধান, অর্থকারী ফসল হিসেবে চন্দ্রকোনার দুটি ব্লকেই ব্যাপক হারে আলু চাষ হয়ে থাকে। এসময়ে চন্দ্রকোনার সীতানগর, বৈদ্যনাথপুর, পিয়ারডাঙ্গা, ঢলবাঁধ, পলাশচাবড়ী সহ একাধিক জায়গার মাঠগুলিতে জলদি চাষ হিসাবে পোখরাজ আলু লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে আলু গাছও বেরিয়ে যায়। মূলত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই এলাকায় আলু লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। 

তবে এবছর ছবিটা ভিন্ন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ধান চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় কৃষকদের। এখনও এই সমস্ত এলাকার মাঠগুলিতে ধান কাটার কাজ শেষ হয়নি। যার জেরে এবছর আলু চাষ প্রায় একমাস পিছিয়ে গেছে এমনটাই জানাচ্ছেন কৃষকরা।

ggthyjlol

বর্তমানে মাঠে নুইয়ে পড়া ধান কেটে তোলার পাশাপাশি আলু লাগানোর কাজও শুরু হয়েছে। কৃষকদের কথায়, ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে ধান চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠ থেকে ধান তোলা শুরু হয়েছে। এর জেরে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে আলু চাষ, চাষ পিছিয়ে যাওয়ায় ফলনে প্রভাব পড়বে। 

আলু চাষ মূলত শীতকালের ফসল কিন্তু এখনও শীতের আমেজও নেই। এছাড়াও কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে আলু চাষের শুরুতেই রাসায়নিক সার ও বীজ আলুর চড়া দামে। তাদের অভিযোগ, বর্তমানে পোখরাজ আলু প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) কোথাও ১৬০০ টাকা আবার কোথাও ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে কয়েকবছর আগে দাম ছিল ৯০০-১০০০ টাকা। জ্যোতি আলুর দাম বর্তমানে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা। তবে বর্তমানে পোখরাজ আলুর চাহিদা বেশি। জ্যোতি আলুর চাষ শুরু হতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। পিছিয়েছে জ্যোতি আলুর চাষও। 

ghjkjh5j7

বীজ আলুর পাশাপাশি রাসায়নিক সারের কালোবাজারি চলছে ফলে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে রাসায়নিক সার দাবি কৃষকদের। ফলে এবছর আলু চাষের শুরুতেই বিঘা প্রতি খরচ ৩০ হাজার টাকায় দাঁড়াচ্ছে এমনটাই দাবি কৃষকদের। ধানের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পরেও কেউ জমানো পুঁজি আবার কেউ ধারদেনা করে আলু চাষ শুরু করেছেন। ফলন ও সঠিক দাম না মিললে ধানের পর আলু চাষ করে দেনায় ডুবতে হবে আশঙ্কায় কৃষকরা।

আবারও গভীর নিম্নচাপের পূর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের। আলু চাষের শুরুতে বৃষ্টি হলে চাষে প্রভাব পড়বে। শীত কবে আসবে তা নিয়েও শঙ্কায় কৃষকরা। 

একদিকে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় অপরদিকে কৃষিজাত দ্রব্যর কালোবাজারি ও চড়া দামে বিধ্বস্ত কৃষকরা। যদিও বীজ আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে পোখরাজ আলুর চাহিদা বেশি জোগান কম। দাম ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে। আর জ্যোতি আলুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। কৃষকদের কথা ভেবে দাম নিয়ন্ত্রণ ও কালোবাজারি ঠেকাতে সরকার সদর্থক ভূমিকা নিক চাইছেন কৃষকরা।