হরি ঘোষ, লাউদোহা : গতকালের বিধ্বংসী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় একটা পুরো আম বাগান। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেলে পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর (Pandobeswar) এর উপর আছড়ে পড়ে প্রবল ঝড়। ঝড়ের সাথে প্রবল বেগে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিও শুরু হয় । আর এতেই সর্বনাশ ডেকে নিয়ে আসে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের তিলাবনি গ্রামের আম চাষীদের কপালে। কয়েক মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পুরো আম বাগান । এর আগেও দুটি ঝড়ে ক্ষতি হয়েছিল আম বাগানের । গাছ থেকে ঝরে পড়েছিল প্রচুর আম ।
তবে বিশাল এই আম বাগানের যে আম বেচে ছিল তা ছিল যথেষ্ট এমনটাই আম চাষিরা মনে করছেন। ভরসা ছিল আম্রপালি আমের ফলনের ওপর। কয়েক বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি এই আম বাগান। এখানে রয়েছে শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ । অ্যালফেনসো থেকে শুরু করে আম্রপালি, বৈশাখী,চন্দ্রমুখী, ল্যাংড়া বিভিন্ন প্রজাতির আম ছিল। বিগত দুটি ঝড়ে অন্যান্য আমের ক্ষতি হলেও খুব ক্ষতি হয়নি আম্রপালি আমের । চাষীদের ভরসা ছিল এই আমটাই তাদের এ বছর বাঁচাবে । কিন্তু গতকালের ঘূর্ণিঝড়ে সব শেষ হয়ে গেল। প্রকৃতির শক্তির ওপর অসহায় মানুষ ।
দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের তিলাবনি গ্রামের এই আম বাগানটি লাউদোহা পঞ্চায়েতের অধীনে। দু বছরে মোটা টাকা সম্বল করে এলাকার কিছু বেকার যুবক এই বাগানে আম চাষ করেছিলেন। কিন্তু প্রকৃতির রোষে পড়ে অসহায় আম চাষিরা । এই বাগানে মোট ১২ জন বর্তমানে কর্মরত, এই আম গাছগুলির এতদিন ধরে দেখাশোনা করে আসছিলেন সকলে। আম চাষীরা এভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে কিভাবে তাদের বাগানের শ্রমিকদের টাকা মেটাবেন? আর কিভাবেই বা পঞ্চায়েতের থেকে নেওয়া টাকা মেটাবেন? এসব কিছু ভেবে অস্থির তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের মারফত পঞ্চায়েত ব্লক সভাপতি ও বিধায়কের কাছে আম চাষি বরুণ নায়ক বিশেষ আবেদন করেন। মানবিকতার খাতিরে তাদের দিকটা একটু ভেবে দেখা হোক বলে দাবি করেন চাষি। তিনি বলেন গতবারেও আম চাষে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তখন পঞ্চায়েত মানবিকতার মুখ দেখিয়েছিল । কিন্তু এবারের ক্ষতি তাদের সমস্ত রকম সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। কয়েক মিনিটের প্রবল ঝড়ে মাথায় হাত আম চাষিদের।
এই ব্যাপারে লাউ দোহা পঞ্চায়েতের প্রধান পিনাকী ব্যানার্জি জানান, আম বাগান যখন চুক্তিতে দেওয়া হয় তখনই পরিষ্কার বলা হয়েছিল, আম চাষের সময়টা যেহেতু ঝড় বৃষ্টির, তাই বাগানের জন্য বীমা করা আবশ্যক । প্রধান এও জানান যদি বীমা করা থাকে আম চাষিদের,তাহলে যা ক্ষতি হয়েছে কিছুটা পূরণ হতে পারে ।
অন্যদিকে প্রবল ক্ষতির মুখে পড়ে একেবারে জলের দরে আম বাগান চত্বরে আম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে চাষিরা।