নিজস্ব প্রতিবেদন : নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পরিস্থিতি দেখে ডিভিসির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি ঝাড়খণ্ডেরও সমালোচনা করেছেন, যেহেতু সেখানে জল ছাড়ার কারণে সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনের তরফে দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক নয়। তাদের ছাড়া জলই আমাদের ভোগান্তির কারণ। এভাবে সম্পর্ক রাখা অর্থহীন।” তার এই মন্তব্যে ডিভিসির কার্যকলাপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ পায়। তিনি সমস্যার সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপের জন্য জোর দেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়খণ্ড সরকারকে দুষে বলেন, “তোমার রাজ্যকে বাঁচাতে আমি আমার রাজ্যের জনগণের ক্ষতি মেনে নিতে পারি না। তাই আগামী তিন দিন ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করা হল।” তিনি আরও জানান, জাতীয় সড়কের ওপর জল প্রবাহিত হচ্ছে, যা গাড়ি ডুবানোর মতো বিপদের সৃষ্টি করতে পারে। প্রশাসনের তরফে সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “রাজ্যের বকেয়া অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। ৫০ লক্ষ পাকা বাড়ির প্রয়োজন, কিন্তু আবাসের টাকা পাচ্ছি না। রাজ্য এগারো লক্ষ বাড়ি তৈরি করবে, তবে আরও বাড়ির প্রয়োজন। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।” তিনি কেন্দ্রের দৃষ্টির অভাবের কথা তুলে ধরেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যার সময়ে সাপের উপদ্রব বাড়ার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “সাপে কামড়ানো ও জলবাহিত রোগের সম্ভাবনা বাড়ছে। তাই ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।” এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
পাঁশকুড়ায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যা ত্রাণ সংক্রান্ত একটি বড় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “ত্রাণের ত্রিপল একটির পরিবর্তে তিনটি করে দিতে হবে।” এই নির্দেশের মাধ্যমে তিনি বানভাসি মানুষের সহায়তার বিষয়ে গুরুত্ব দেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “বীরভূমের ঘটনা থেকে শিক্ষা নাও। জলের স্রোতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। কাল জেলাশাসক, সাংসদ, বিধায়করা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।” তিনি জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
এদিন আরজি কর প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ কিছু মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিন। আমি আর বেশি কিছু বলব না।”