নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার লক্ষ্মীর ভান্ডারেও সাইবার অপরাধীদের থাবা। দিনহাটার লক্ষ্মীর ভান্ডারের একাধিক উপভোক্তার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। কারো দুবছর থেকেই অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে, কারো আবার গত চারমাস থেকে। এরকম বেশ কিছু অভিযোগ ইতিমধ্যে মহকুমা শাসকের কাছে জমা পড়েছে।
উল্লেখ্য গত কয়েকদিন থেকেই ট্যাব কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর গোটা রাজ্য জুড়ে তোলপার হয়েছে। ঠিক তার পরে পরেই দিনহাটায় একাধিক উপভোক্তার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা অন্য কারো অ্যাকাউন্টে যাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যে লিখিতভাবে দুটি অভিযোগ জমা পড়েছে মহকুমা শাসকের কাছে। তাদের মধ্যে একজন দিনহাটা বোর্ডিংপাড়া ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেরিনা খাতুন।
তার কথায় গত ২০২১ সালের শেষের দিকে তিনি দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদন জমা করেন। সেখানে তিনি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশ বইয়ের কপি জমা করেন। আবেদনের দীর্ঘ দিন পরেও তার পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের কোনো টাকা ঢোকে না। একাধিকবার চেক করলেও দেখা যায় অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই ঢোকে নি। এর ফলে তিনি একপ্রকার আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু ঠিক তারপরেই এক প্রতিবেশীর কাছে জানতে পারে অনলাইন ক্যাফেতে গিয়ে তার আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে ট্র্যাকিং করা যায়। তৎক্ষনাৎ সে এক ক্যাফেতে গেলে জানতে পারে তার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ২০২২ থেকেই ঢুকছে, তবে সেটা তার নির্দিষ্ট করা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে নয়, তা ঢুকছে পোস্ট অফিসের একটি অ্যাকাউন্টে। যা তার অ্যাকাউন্ট নয়, এমনকি তার পরিচিত কারোর অ্যাকাউন্টও নয়। এরফলে সন্দেহ হওয়ায় মহকুমা শাসকের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি সে জানায়।
অন্যদিকে দিনহাটা পুরসভারই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেরিনা বিবির স্বামী নুরুল মিঞার অভিযোগ তার স্ত্রী সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই টাকা পাচ্ছিলো। হঠাৎই গত চার মাস থেকে স্ত্রী লক্ষ করেন তার অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে না। এরপরেই ছেলে ট্র্যাক করে দেখতে পায় সেন্ট্রাল ব্যাংকেরই অন্য একটি অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকছে। যা তাদের নয়, স্বাভাবিক ভাবেই এবিষয়ে সন্দেহ হতেই তারা লিখিতভাবে বিষয়টি মহকুমা শাসকের কাছে জানান।
তবে বিশেষ সূত্র মারফত খবর এরকম অনেক অভিযোগই প্রশাসনের কাছে আসছে। সেক্ষেত্রে লিখিতভাবে না জানালেও উপভোক্তারা মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানাচ্ছেন মহকুমা শাসকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে। স্বাভাবিক ভাবেই এসব উপভোক্তার টাকা কীভাবে অন্য উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
যদিও দিনহাটা মহকুমা শাসক বিধু শেখরের কথায় তিনি এরকম দুটি অভিযোগ পেয়েছেন আজ। সেগুলি আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য জেলাতে পাঠানো হচ্ছে বলেই তিনি জানান। তবে এই খবর সামনে আসতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অনেকের।