নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: গ্রামবাসীদের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। গ্রামের মধ্যে একটি গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের নারায়ণগড় থানার ভদ্রকালী গ্রামের।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের নারায়ণগড় থানার ভদ্রকালী গ্রামের একটি গাছে বছর ৪৬ এর এক ব্যক্তি বাপি খিলাড়িকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন গ্রামের বেশ কয়েকজন। পরে সেই ঘটনার খবর পেয়ে নারায়ণগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
এই ঘটনার পরের দিন সকালে তার বাড়ির লোকজন তাকে ঘুম থেকে তোলার জন্য ডাকাডাকি করলেও, তিনি না ওঠায় তাকে তড়িঘড়ি করে মকরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের বক্তব্য় যে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে এসে গালাগালি করতেন ওই ব্যক্তি।
এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ সংগ্রহ করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে নারায়ণগড় থানার পুলিশ। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে যে, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, রাজ্যে বেশ কয়েকদিন ধরেই গণপিটুনির খবর সামনে এসেছে। এই নিয়ে রাজ্য সরকার নানাবিধ ব্যবস্থাও নিয়েছে। এই আবহে রাজ্য পুলিশকেও বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্যে এমন ঘটনার কথা সামনে এলে দ্রুত তার সমাধান এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আরও উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে গণপিটুনির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং বিল, ২০১৯’ পাশ করে। বর্তমানে গণপিটুনি এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেক ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ে। যার যেরে অনেক নিরীহ ব্যক্তির ওপরে গণপিটুনির প্রভাব পড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ডাইনি, ছেলেধরা বা চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যায়। অনেক সময়ে সন্দেহের বশেই বহু মানুষ গণপিটুনির শিকার হয়ে থাকেন। তবে এই ঘটনা শুধুমাত্র গ্রামেই নয়, শহর এবং শহরতলীতেও এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটছে।
রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সচেতনতার বার্তা দিয়েছে। এই আবহে দেন, কারও আচরণে সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশ-প্রশাসনকে জানানোর কথা বলা হয়েছে।