হরি ঘোষ, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের কল্পতরু মেলার দখল নিয়ে কয়েক দিন ধরেই তুঙ্গে রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সম্প্রতি স্টল বন্টনের অস্থায়ী কার্যালয়ের টেবিল উল্টে মেলা কমিটিকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল ৩১ নম্বর ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের দুই সভাপতি দেবনারায়ন সিং ও সুব্রত ব্রহ্মর উপস্থিতিতে। যারা এই তান্ডব করছে তারা এলাকার সমাজবিরোধী বলেও সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন মেলা কমিটির কোষাধক্ষ্য দীপঙ্কর লাহা। তার একদিন পরেই মঙ্গলবার ধুমধাম এর সাথে কল্পতরু মেলার খুঁটিপূজো হয়। আর সেই রাতেই অস্থায়ী কার্যালয়ে জ্বলে গেল আগুন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে চেয়ার, টেবিল। ছেঁড়া হয়েছে ব্যানারসহ প্যান্ডেলের ত্রিপল। প্যান্ডেলের বাইরে চেয়ারে জ্বলছে আগুন যাকে ঘিরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় আরো ঘনীভূত হচ্ছে।
মেলা কমিটির সদস্য কল্লোল ব্যানার্জি বলেন, "মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক প্রৌঢ়। তখনই তিনি দেখেন এই অস্থায়ী কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল বাইরে পড়ে আছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। পুলিশ এসে জল দিয়ে আগুন নেভায়। যারা মেলার দখল নিতে চাইছিল তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আমাদের অনুমান। আবার এর মাঝে ঘোলা জলেও কেউ মাছ ধরার চেষ্টা করতে পারে। আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে"। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি করলেন ৩১নং ওয়ার্ডের তৃণমূলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন আনসারী। তিনি বলেন, "আমরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলাম সেই জন্য আমাদের ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। কিছু না পেয়ে এখন আমাদের মাতাল বলা হচ্ছে। দুর্নীতি চাপা দেওয়ার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে ওরাই"।
সমালোচনায় সরব হয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপির বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই বলেন, "বহু প্রাচীন কল্পতরু উৎসবকে ঘিরেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তাহলে বুঝতেই পারছেন পরিস্থিতি কোন জায়গায় যাচ্ছে। তোলাবাজি ছাড়া তৃণমূল একেবারেই অচল'। রাতারাতি আবার ওই অস্থায়ী কার্যালয়ের ছেঁড়া অংশ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হল। তাহলে কি ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে রাতারাতি পোড়া চেয়ার, ছেঁড়া ব্যানার আর প্যান্ডেলের ছেঁড়া অংশ ঢেকে দেওয়া হল? উঠছে বিস্তর প্রশ্ন।