নিজস্ব প্রতিবেদন : আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকরা টানা ৪১ দিন কর্মবিরতিতে রয়েছেন। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ১০ দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভও চলছে, যেখানে চিকিৎসকদের একাধিক দাবি উপস্থাপন করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই দীর্ঘ অবস্থান বিক্ষোভে অনেক সাধারণ মানুষ তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, খাদ্য, জল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করে। এভাবে আন্দোলনটি ধীরে ধীরে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের একাধিক দাবি মেনে নিয়ে কর্মবিরতি ভেঙে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিতে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মবিরতি না ভেঙে বন্যা দুর্গতদের সহায়তা করার জন্য তাঁদের আন্দোলনে প্রাপ্ত সাহায্যের একটি অংশ ত্রাণ হিসেবে ব্যবহার করবেন।
এটি স্পষ্ট যে, চিকিৎসকরা তাঁদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতাও অনুভব করছেন এবং এর মাধ্যমে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের এই উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ একত্রিত হচ্ছে, যা আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করছে।
বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও হুমকি সংস্কৃতি বা থ্রেট কালচার চলছে, যা মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় নবান্ন সভাগৃহে রাজ্য ও জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি প্রবল বৃষ্টির কারণে প্লাবিত দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন জেলা পরিদর্শনে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে গিয়েছেন এবং ওই জেলায় রাত কাটাচ্ছেন।
সম্প্রতি টানা বৃষ্টির ফলে একাধিক জেলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলাধার থেকে লাগাতার জল ছাড়ার কারণে নদীর জলস্তর বাড়ছে, ফলে হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং দুই মেদিনীপুরের কিছু অঞ্চলে বাঁধ ভেঙে প্লাবন দেখা দিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল নামানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে। সার্কিট হাউসের সামনে তাঁর কনভয় কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলে, তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বিধায়ক দীনেন রায়ের সঙ্গে কথাও বলেন। মেদিনীপুর গ্রামীণের কিছু এলাকা জলমগ্ন হওয়ার বিষয়টি দীনেন রায় মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। তিনি দুর্গত মানুষের পাশে থাকতে বিধায়ককে নির্দেশ দেন। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয়তা এবং বিধায়কদের নির্দেশনা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে উঠছে।