" অভিযুক্ত স্যালাইন পরীক্ষা না করে কিভাবে সাসপেন্ড ? " প্রশ্ন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যার

প্রসূতি মৃত্যুতে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়।

author-image
Adrita
New Update
া

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুরঃ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে হাজির হলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা ডক্টর অর্চনা মজুমদার। শনিবার বেলা এগারোটা নাগাদ মেদিনীপুর হাসপাতালে পৌঁছে হাসপাতালের সুপার, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ ৯ জানুয়ারি রাতে অপারেশনে থাকা সমস্ত চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। একাধিক তথ্য সংগ্রহ করেন। যদিও প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যের ফটো কপি তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, " আমি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম আমাকে সব কিছুর একটা করে ফটো কপি দেওয়া হোক। কারণ আমি এটার একটা রিপোর্ট তৈরি করব। এই ডকুমেন্ট যেখানে যেখানে জমা দেবো সেখানে পাঠাতে হবে। কর্তৃপক্ষ উপরমহলে কথা বলেছেন এবং বলার পরেই তারা কিন্তু আমাকে সমস্ত ডকুমেন্ট সম্পূর্ণভাবে দেননি।" শুধু তাই নয়, তিনি এই ঘটনায় সিনিয়র বা জুনিয়র চিকিৎসকদের দোষ দেখতে পাচ্ছেন না। বরং যে স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন কর্তৃপক্ষের দিকে। তিনি বলেন, "যে স্যালাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তা পরীক্ষা না করে কিভাবে চিকিৎসকদের সাসপেন্ড করা হলো ? "

া

এদিন টানা তিন ঘন্টা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্য শংকর সারেঙ্গী, হাসপাতালের নতুন সুপার ইন্দ্রনীল সেন, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষা মৌসুমি নন্দী ও ৯ জনুয়ারিতে অপারেশনের সময় উপস্থিত থাকা বিভিন্ন চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা। বৈঠকের পর রওনা দেন চিকিৎসা বিভ্রাটে মৃত্যু মামনি রুইদাসের বাড়ির উদ্দেশ্যে। তবে তার আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর ও সিআইডির পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি। তিনি বলেন, " ঘটনার দিন অপারেশনের সময় আরএমও এবং সিনিয়র চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। যে জুনিয়র ডাক্তারদের কথা বলা হচ্ছে, গত ২-৩ বছর ধরে অপারেশন করে আসছেন তারা। অনভিজ্ঞ হাতে অপারেশন হয়েছে এটা বলা যাবে না। অন্যদিকে এই ঘটনার পর যে স্যালাইন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সেটিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো উচিত ছিল, তা পাঠানো হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ফ্লুয়েড (স্যালাইন) নিয়ে অভিযোগ সেগুলো যে স্টোরে ছিল সমস্ত নাকি সিল করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করেছি বিভিন্নজনকে আপনারা কি সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন? কোন ওষুধের উপর যদি আমাদের প্রশ্ন থাকে, সন্দেহ থাকে, যেখানে মানুষ খালি চোখে ফাঙ্গাস দেখতে পায়, সেই জায়গায় অতি অবশ্যই পরীক্ষা করতে পাঠানো উচিত। হতে পারে ওই স্যালাইনের মধ্যেই কোন গন্ডগোল রয়েছে। আমরা শুনেছি কর্নাটকে ব্যান করা হয়েছিল। এখানে করা হয়নি। এটা যদি গাফিলতি হয়, তার চেয়েও বড় গাফিলতি হলো এগুলো ব্যবহারের আগে কেন বন্ধ করা হয়নি। কেন মা ও বাচ্চার শরীরে প্রয়োগ করা হলো। এটা গাফিলতি নাকি কারো স্বার্থ রক্ষার জন্য হয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না। একজন পিজিটি কেন সিজার করল এটা বলে সাসপেন্ড করা উচিতও না, হয়ও না। কোনদিন শুনিনি, এই প্রথম শুনছি। স্যালাইন পরীক্ষা না করে কিভাবে সাসপেন্ড করা হলো ? "

Midnapore Medical - Midnapore Medical: প্রসূতি-মৃত্যুতে তদন্ত কমিটি  স্বাস্থ্য দফতরের, আজ মেদিনীপুর মেডিক্যালে যাচ্ছে ১০ জনের টিম - Expired  Saline Allegation Patient Death ...

এদিন যে মুহূর্তে মেডিকেল কলেজের ভেতরে চিকিৎসকদের সঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের বৈঠক চলছিল, সেই সময় জুনিয়র ডাক্তাররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মেডিকেল কলেজের ভেতরেই। কারণ ততক্ষণে সাসপেন্ড হওয়া ডাক্তারদের তালিকা তাদের হাতে পৌঁছে গিয়েছিল, একইসঙ্গে সিআইডির পক্ষ থেকে যে মামলা করা হয়েছিল কোতোয়ালি থানায়, সেই কপিও পেয়ে গিয়েছিলেন তারা। উত্তেজিত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল, " তাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে। এবং তাদের অভিযোগ শোনানো হচ্ছে না জাতীয় মহিলা কমিশনের আধিকারিককে। " এই নিয়ে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হলে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের বাইরে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ হাজির হয়ে যায়। যেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। এই প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, " জুনিয়র ডাক্তাররা মানসিক চাপ পেয়েছেন। তাই এই সমস্ত মন্তব্য করছেন। পুরো বিষয়টা তদন্তের মধ্যে রয়েছে। আমরা কথা বলছি তাদের সঙ্গে। "