নিজস্ব সংবাদদাতা, বেলদাঃ পুজোয় নেই কোন আড়ম্বর। সময়, রীতি মেনেই পুজিতা হন দেবী দুর্গা। একদম ঘরোয়া পরিবেশে দুর্গাপুজোর নিয়ম মেনেই পুজা পান দেবী মহামায়া। এভাবেই একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতি বছর আরাধনা হয় দশভূজার।
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে অন্যতম দুর্গোৎসব। এই দুর্গোৎসবকে ঘিরে থাকে একাধিক আয়োজন। প্যান্ডেল থেকে প্রতিমায় থাকে থিমের ছোঁয়া কিংবা প্রতিটা দিন থাকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঘটা করে পুজো অর্চনার আয়োজন। তবে সম্পূর্ণ রীতি মেনে আড়ম্বরহীনভাবে পুজো হয় এখানে। প্রতিদিন বেশ ভালো ভিড় জমে। অষ্টমী হোক কিংবা দশমী নিষ্ঠাভরে দেবী মহামায়া আরাধনা করেন সকলে।
প্রায় একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে সম্পূর্ণ নিয়ম, রীতি ও সময় মেনে দেবী দুর্গার আরাধনায় মাতেন প্রত্যেকে। বেলদার ধর্মশালা সর্বজনীন দুর্গাপুজো, নয় নয় করে প্রায় ১১০ বছরের পুরানো এই পুজো। পুজোর তেমন ইতিহাস না থাকলেও, জানা যায়, তৎকালীন এই এলাকা ছিল নন্দ পরিবারের অধীনে। নন্দ ট্রাস্টের সম্পতির উপর তৈরী ও নন্দদের তৈরী বেলদা গঙ্গাধর ধর্মশালায় আরাধনা শুরু হয় দেবীর।
কথিত আছে, প্রায় ১০৭/৮ বছর আগে এলাকার বড় দুর্গাপুজা বলতে কৃষ্ণপুর এলাকার অভিজাত জমিদার বাড়ির পুজা। এরপর ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে সাধারণের জন্য তৈরী এই ধর্মশালায় দুর্গাপুজার প্রচলন করেন। আরও শোনা যায় দুর্গা নয়, এখানে দুর্গাপুজো শুরুর অনেক আগে থেকে দেবী বাসন্তি পুজিতা হতেন।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১২০ বছর কি তারও আগে পুরি তীর্থযাত্রীদের জন্য তৈরী হয়েছিল ধর্মশালা। যেখানে তীর্থযাত্রীরা এখানে এসে রাত্রিবাস করতেন। তবে এখনও রীতি মেনই বছরে পাঁচদিন পুজো হয়। তবে ধর্মশালা নাম থাকলেও কাজে আর নেই। এখন প্রাত্যহিক শাড়ি দোকান সহ নানা দোকান বসে। তবে পুজোর দিন তা পরিষ্কার করে মহামায়ার আরাধনায় মাতে সকলে। অষ্টমীর সকালে বেশ ভীড় জমে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য। তবে সাধারণ খোল কীর্তনেই পুজো হয় ধর্মশালায়। যে পুজোতে শুধু বেলদা নয় পার্শ্ববর্তী প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ভীড় জমায়। রীতি, সামাজিক দিক মেনেই বছরের পর বছর পুজো হয় ধর্মশালায়। মেতে ওঠেন আপামর সাধারণ মানুষ।