নিজস্ব প্রতিনিধি: দীঘা সমুদ্র সৈকতের অদূরে নৌকায় করে দেবী লঙ্কেশ্বরী শ্রীলঙ্কা থেকে আসেন দীঘার অদূরে মীরগোদা লঙ্কেশ্বরীতে। লঙ্কেশ্বরী মা কীভাবে এলেন? দীঘায়, ২০০০ বছর আগের ইতিহাস দীঘার মন্দিরে। লঙ্কেশ্বরী মায়ের ইতিহাস বহু প্রাচীন। ইতিহাস প্রচলিত কাহিনী ও পৌরাণিক ইতিবৃত্তের সংমিশ্রণ লঙ্কেশ্বরীকে মহিমান্বিত করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলবর্তী রামনগরের মিরগোদায় অবস্থিত এই মন্দির। এই দেবী শ্রীলঙ্কার অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে পূজিত হন এখানে। কথায় আছে লঙ্কাধিপতি রাবণের ওপর রুষ্ট হয়ে লঙ্কেশ্বরী দেবী চলে আসেন এখানে। রাবনের সীতা হরণ সহ নানা অন্যায় কাজে তিনি অসন্তুষ্ট ও ক্রুদ্ধ হন এবং লঙ্কা ছেড়ে একটি সুন্দর নৌকায় করে এখানে চলে আসেন। ১৫০০ থেকে ২০০০ বছর আগে এখানে সমুদ্র ছিল যার কিছু প্রমাণ এখনও রয়েছে। প্রায় পাঁচশো বছর আগে কালাপাহাড়ের আক্রমণে প্রাচীন মন্দিরটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীকালে সাধারণ এক মন্দির নির্মিত হয়।
এই মন্দিরকে ঘিরে নানা অলৌকিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। এই মন্দিরের পিছনে রয়েছে এক বিশেষ গাছ যার নাম কেউই জানে না। যে গাছের নাম 'অজানা গাছ'। মায়ের মন্দিরে যেমন ভোগ দেওয়া হয়, ঠিক তেমনিভাবে মন্দিরের পেছনে সেই অজানা গাছের পেছনেও ভোগ দেওয়া হয়। স্বাধীনতার বহুবছর আগে এই দেবী চলে আসেন ভারতবর্ষের এই উপকূলবর্তী এলাকায়। প্রাচীনকালে লঙ্কেশরী মন্দিরের কাছেই সমুদ্র ছিল। একটি ছোট বন্দর ছিল লাইট হাউস ও রেলা যার প্রমাণ। দেবী সিংহল থেকে আসার ঘটনায় প্রমাণ হয় সিংহলের সাথে এই বন্দরের যোগাযোগ ছিল। ইফ সিঙ এসেছিলেন হিউ এন সাং এর কয়েক বছর পর ৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে। লঙ্কেশ্বরী দেবীকে খুব ভালো করে দেখলেই বোঝা যায় যে উনি সম্ভবত বিষ্ণুর অবতার বরাহ দেবতা। এখন কিছু সময় ধরে খোঁড়াখুড়ি করলেই হয়তো বেরিয়ে আসবে পুরোনো মন্দিরে ধ্বংসাবশেষ।
মন্দিরে একদিকে যেমন দেবীর মূর্তি রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে মাঝি স্বরূপ আর একটি বিশেষ মূর্তিও রয়েছে। দেবী লঙ্কেশ্বরীর মূর্তির সাথে সাথে এক পাথরের চাঁইও রয়েছে, তাতে দেবীর বিভিন্ন রূপের কাহিনী উল্লেখ রয়েছে। মন্দিরে দেবীর বেদির সামনে রয়েছে গর্ত যেখান থেকে সমুদ্রের আওয়াজ শোনা যায় এমনকি সমুদ্রের জলও দেখা যায়। জাগ্রত এই লঙ্কেশ্বরী দেবীকে পুজো দেওয়ার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন। এমনকি অনেক পর্যটকও আসেন এখানে। এই দেবীকে ঘিরে নানা অলৌকিক কাহিনী প্রচলিত আছে।