নিজস্ব সংবাদদাতা, ডেবরাঃ রীতি রেওয়াজ মেনেই পূজিতা হয়ে আসছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরার চকনরসিংয়ের দে বাড়ির মা দুর্গা। জানা যায় এই গ্রাম থেকেই ৭ জন স্বাধীনতা সংগ্রামী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। ব্রিটিশদের জিনিস বর্জন করতে হবে, তাই ইলেকট্রিক লাইটের প্রচলন নেই এই দুর্গাপুজোতে। নারকেল তেলের ঝাড়বাতিতে মা পূজিতা হন। ঢেঁকি কুটো চাল ও বাড়ির তৈরি নারকেল নাড়ু ও সন্দেশ নিবেদন করা হয় মাকে ৷
জানা যায়, আজ থেকে ৩৬৩ বছর আগে বর্গী হানার সময় ঘাটালের চেঁচুয়া থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের চকনরসিংহ গ্রামে চলে আসেন চেঁচুয়ার রাজা বাবুরাম দে। প্রজাদের মঙ্গলকামনায় দেবী দুর্গাকে চেঁচুয়া থেকে নিয়ে এসে কুলদেবতা রূপে প্রতিষ্ঠিত করেন। আর সেই সময় থেকেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন এই দে পরিবারের রাজা বাবুরাম দে। এরপরে এই গ্রাম থেকেই আরও ৭ জন ব্যক্তি স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হন ৷ তাদের মূল মন্ত্র ছিল ব্রিটিশদের তাড়াতে হবে।
তাই সেই সময় থেকেই ব্রিটিশদের যাবতীয় জিনিস বর্জন করার শপথ নেওয়া হয়। তাই কুলদেবতা দুর্গা পুজোতে কোনো ইলেকট্রিক লাইটের ব্যবহার হয়না। নারকেল তেলের বড় ঝাড়বাতির আলোতেই পূজিতা হন দেবী দুর্গা। বাইরের কোনও মিষ্টান্ন নয়, নিজেদের ঢেঁকি ছাঁটা ধানের চিড়ে, বাড়ির তৈরি নাড়ু দিয়েই পূজিতা জন দেবী ৷ বর্তমানে ওই এলাকায় ৮৭ টির বেশি পরিবার রয়েছে। সকলেই দে পরিবারের সদস্য।
বর্তমানে পূর্বের রীতি রেওয়াজ মেনেই দে পরিবারের দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। পুজোর দিনগুলিতে যাত্রাপালা, বাড়ির মহিলাদের নিয়ে নাটক আয়োজন করা হয়। এই পুজো দে পরিবারের পুজো হলেও, তাতে গ্রামবাসীরাও সামিল হন। পুজোর দিনগুলিতে গ্রামবাসীরাও অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। এই বাড়ির পুজোতে কুমারী পুজো, সিঁদুর খেলা সবেরই প্রচলন রয়েছে।