নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: আজ জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তার আগে জঙ্গলে যে রাস্তা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের আনাগোনা, সেই রাস্তায় দেখা গেল দাঁতালকে। তারপরেই দিনভর ঐরাবত গাড়ি নিয়ে টহল দিলেন বিভিন্ন এলাকায়। সতর্কবার্তার পাশাপাশি কোন সমস্যা হলে বনকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার কথাও জানানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এ বারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫২ হাজার ৮৯২। তার মধ্যে ছাত্র ২৪৬৭৬ এবং ছাত্রী ২৮২১৬ জন। গতবছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬২৪। জেলায় সর্বাধিক পরীক্ষার্থী খড়্গপুর মহকুমাতে ২৪০৭১ জন। সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর সহ গড়বেতা, শালবনী ও গোয়ালতোড় এলাকার বহু মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীদের পৌঁছাতে হাতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কড়া পদক্ষেপ বনদপ্তরের। হাতির এলাকায় সরু রাস্তায় বাসের ব্যারিকেড করে দিল বনদপ্তর। মোতায়েন করা হলো বনদপ্তরের কর্মী। অন্যদিকে হাতির করিডর এলাকায় বিশেষ এসকর্ট সহযোগী ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হল বনদপ্তরের টিম। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার জন্য সমস্ত বনকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
গত দু'বছর আগে জলপাইগুড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছিল এক ছাত্রের। সেই ঘটনার পর কোনরকম হাতি উপদ্রুব এলাকায় ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। জেলাশাসকের নির্দেশে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি এলাকায় হাতির অবস্থান চিহ্নিত করে বিশেষ প্রতিরক্ষা টিম মোতায়েন করা হয়েছে। মেদিনীপুর সদরের চাঁদড়া, গুড়গুড়িপাল, ধেড়ুয়া এলাকাতে রবিবার সকাল থেকে বনদপ্তর মাইকিং করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নিরাপদ রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জঙ্গলের ভেতরের রাস্তায় যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জঙ্গলের ভেতরের রাস্তাগুলিতে বাঁশের ব্যারিকেড করে বনকর্মী মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। যাতে বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে কোন পরীক্ষার্থী যাতায়াত করতে না পারে। বড় রাস্তাগুলিতে বনদপ্তরের ঐরাবত এসকর্ট সহযোগে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত যাতায়াত করবে। জেলাশাসক খুরশীদ আলী কাদরী জানিয়েছেন, "সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সব জায়গাতেই। জঙ্গলমহলে হাতি যেখানে রয়েছে সেখানে কোনোভাবেই যাতে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে সমস্যায় না পড়েন তার জন্য সব প্রস্তুতি করে দেওয়া হয়েছে।