নিজস্ব সংবাদদাতা : বর্ষা আসছে। তার আগেই মন কেমন করা শুরু হয়ে গিয়েছে ইলিশ প্রেমীদের। সপ্তাহান্তের ঝড়-বৃষ্টিতে পাতে খিঁচুড়ি পড়লেও দোসর হিসেবে ছিল না ইলিশ ভাজা। মাছের প্রজননকালীন সময়ে জারি ছিল নিষেধাজ্ঞা। ফলে ইলিশের খোঁজে বেরতো পারেননি মৎস্যজীবীরা। তবে সুখবর হয়, বৃহস্পতিবার থেকেই উঠে যাচ্ছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে ইলিশের খোঁজে পাড়ি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। বর্ষা আসতে আসতে ইলিশও চলে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আগামীকাল পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ট্রলার, লঞ্চ মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ট্রলার বের হচ্ছে ইলিশের খোঁজে। এছাড়াও দিঘা, শঙ্করপুর, পেতুয়াঘাট, শৌলা থেকে শয়ে শয়ে ট্রলার, লঞ্চ সমুদ্রের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করতে চলেছে। এদিকে মৎস্যজীবীদের প্রস্তুতিপর্বও শেষের পথে। ট্রলারগুলিতে জ্বালানি, খাদ্য সামগ্রী, শিকারের সরঞ্জাম, বরফ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী লোডিংয়ের কাজ সেরে ফেলা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সমুদ্র যাত্রায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল মৎস্যজীবীদের সে বিষয়েও অবগত তারা। মাছ ধরার জন্য প্রশাসনের তরফেও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের জন্য। মাছ ধরার ক্ষেত্রে ৯০ মিমি নিচের ফাঁসের জাল ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ সেন্টিমিটারের নিচে মাছ ধরতে পারবেন না মাছ শিকারীরা। পাশাপাশি, মৎসজীবীদের লাইসেন্স, জীবন বীমা সহ অন্যান্য কাগজপত্র সঙ্গে রাখার জন্যেও বলে দেওয়া হয়েছে।ট্রলারগুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ, লাইফ জ্যাকেট, জিপিআরএস রাখা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। মাঝ সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা কোনও রকম বিপদে পড়লেই সংকেত বুঝে সঙ্গে সঙ্গে রওনা দেবে উপকূল রক্ষী বাহিনী। পাশাপাশি, সমুদ্রে গিয়ে ট্রলার যাতে আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারেও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনা বাঁধা পেরিয়ে মহামারী পরবর্তী সময়েও সেভাবে লাভের মুখ দেখতে পারেননি ইলিশ বিক্রেতারা। যেভাবে নিত্য় প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে তাতে প্রভাব পড়েছে মাছের দামেও। হেঁসেল কার্যত আগুন। মধ্যবিত্তের পটেকে পড়ছে টান। সাধ্যের মধ্যে মাছ না পেয়ে অনেকেই তাই মুখ ফিরিয়েছেন রুপোলি শস্যের থেকে। সমুদ্র থেকে অলিশ বোঝাই ট্রলারগুলি ফিরে আসার পর তা কত দামে বিক্রি হবে তার অপেক্ষায় মাছ প্রেমীরা। দাম নাগালের মধ্যে থাকবে তো, মনে ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন।