‘অল ইন্ডিয়া ওবিডিয়েন্স ডগ শো’ তে প্রথম মেদিনীপুরের পোষ্য

ওবিডিয়েন্স শোতে আনুগত্য দেখাতে হয়। এই ‘অল ইন্ডিয়া ওবিডিয়েন্স ডগ শো’ অনুষ্ঠিত হয়েছে কলকাতায়।

author-image
Adrita
New Update
s

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুরঃ ‘অল ইন্ডিয়া ওবিডিয়েন্স ডগ শো’ তে প্রথম হল শহর মেদিনীপুরের পোষ্য। ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ নম্বর পেয়ে বাজিমাত করল সে। পোষ্যটির নাম ‘ভৈরব’। ‘ভৈরব’ আদতে এক জার্মান শেফার্ড। মেদিনীপুরের শুভজিৎ রায়ের কাছে সে থাকে। শুভজিৎ বলছিলেন, ‘‘ মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় গিয়ে অল ইন্ডিয়া শো- এ পারফর্ম করা এবং সেখানে প্রথম হওয়া, এটা সত্যিই বড় প্রাপ্তি। ’’

এর আগেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ওই পোষ্য। ওবিডিয়েন্স শোতে আনুগত্য দেখাতে হয়। এই ‘অল ইন্ডিয়া ওবিডিয়েন্স ডগ শো’ অনুষ্ঠিত হয়েছে কলকাতায়। আনুগত্য দেখিয়েই এই শো- এ প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছে ‘ভৈরব’। শুভজিৎ এক পশুপ্রেমী মানুষ। তার দু’টি পোষ্য ছিল। ‘ভৈরব’ এবং ‘গোল্ডি’। ‘গোল্ডি’ নেড়ি কুকুরের নাম। রাস্তা থেকে কুড়িয়ে তাকে নিজের কাছে রেখেছিলেন শহরের ওই যুবক। তবে মাস তিনেক আগে ‘গোল্ডি’ মারা গিয়েছে। বিভিন্ন শহরে ডগ শো হয়। সেখানে তার পোষ্য নিয়ে যান শুভজিৎ। তিনি এক সময়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ‘গোল্ডি’কে আনার জন্য সে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাকে। তিনি এখন থাকেন এক আবাসনে।

শুভজিৎ বলছিলেন, ‘‘ এক সময়ে জুগনুতলায় একটা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। পরে বাড়িটা ছাড়তে হয়। ক’বছর আগের ঘটনা। মার্চ মাস ছিল। রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। ও (গোল্ডি) রাস্তার পাশে একটা নালার মধ্যে আটকে গিয়েছিল। তখন মাস খানেক বয়স হবে। খুব ছোট ছিল। কষ্ট পেয়ে খুব চিৎকার করছিল। পরের দিন সকালে আমি নালা থেকে তুলে ওকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। ’’  তাঁর কথায়, ‘‘ ওকে এনে রাখার জন্য আমাকে ভাড়া বাড়িটা ছেড়ে দিতে হয়েছিল। বাড়ির মালিক এসে বলেছিলেন, ‘বাড়িটা ছেড়ে দিতে হবে। কুকুর নিয়ে বাড়িতে থাকা যাবে না’। সব শুনে আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে, বাড়িটা ছেড়ে দেবো। এটা কোনও ব্যাপার নয়। আমাকে শুধু একমাস সময় দেওয়া হোক।’’ তিনি বলেন, ‘‘মাস তিনেক আগে ও মারা গেল। ভুল চিকিৎসায়। ’’

এখন ‘ভৈরব’- কে নিয়েই মেতে থাকেন শুভজিৎ। নিয়মিত তাকে প্রশিক্ষণ দেন। তাঁর কথায়, ‘‘ প্রথম প্রথম আমিও ইউটিউব দেখে দেখে কী ভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হয় শিখেছি। বিদেশি কুকুরদের ওবিডিয়েন্স বলে একটা ব্যাপার শুরু থেকেই থাকে। প্রশিক্ষণ পেলে আরও এগোতে পারে।’’ ‘ভৈরব’- কে নিয়ে গর্বের শেষ নেই শুভজিতের। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই ডগ শো- এ ওর সঙ্গে আরও বেশ কিছু প্রতিযোগী ছিল। বিভিন্ন শহর থেকে তারা এসেছিল। সেখানে ও প্রথম হয়েছে। পুরস্কার জিতেছে। সবচেয়ে বড় কথা, ৩০০- র মধ্যে ২৯৭ নম্বর পেয়েছে। ’’ অল ইন্ডিয়া ওবিডিয়েন্স ডগ শো’র আয়োজক ছিল ‘কেনেল ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’।

তাকে প্রশ্ন করা হয় যে, পোষ্যের জন্য কেমন পরিশ্রম করতে হয় ? শুভজিৎ বলছিলেন, ‘‘ প্রচুর সময় দিতে হয়। দিনে তিনবার ট্রেনিং করাতে হয়। কুকুর ভয়েও কাজ করে। তবে আমার কুকুরটা একদম ভালবেসে কাজ করে। লেজ দুলিয়ে, আনন্দ করে কাজ করে। ’’