প্রসূতি মৃত্যুতে চিকিৎসকদের নামে এফআইআর থানায়, আন্দোলনে সংহতি চিকিৎসক ও নার্স সংগঠন

প্রসূতি মৃত্যুতে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়।

author-image
Adrita
New Update
া

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুরঃ মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ১২ জন চিকিৎসককে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও সিআইডির জোড়া তদন্তের পর এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে চিকিৎসক মহলে। শুক্রবার সকাল থেকে পূর্ণ কর্মবিরতির ডাক দিলেও জরুরী পরিষেবা স্বাভাবিক রেখেছে জুনিয়র চিকিৎসকরা। সাসপেন্ড হওয়া ১২ জন চিকিৎসকের নামে কোতোয়ালি থানায় এফআইআর করা হয়েছে। সরকারি কর্তব্যে গাফিলতি, অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। শুক্রবার সকালে পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার গ্রহণ করে সিআইডি। জানা গিয়েছে, সাসপেন্ডেড চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন সিআইডি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন চিকিৎসক ও নার্স সংগঠন জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে এবং রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করেছে। তাদের অভিযোগ, সাসপেন্ড করার আগে শোকজ করতে হয়। তার কাছে জবাবদিহি চাইতে হয়। সদুত্তর না পেলে তখন সাসপেন্ড করে। এক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাদের আরও অভিযোগ, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোথাও উল্লেখ নেই অপারেশনের ভুলের জন্য মৃত্যু হয়েছে। ফলে চিকিৎসকদের একাংশ বিষাক্ত স্যালাইনকে দায়ী করেছে।

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা শুক্রবার থেকে পূর্ণ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন। যদিও এদিন পরিষেবা স্বাভাবিকই ছিল। তবে চোখে পড়ার মতো ছিল সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিতি। প্রতি মুহূর্তেই তাদের ছিল আনাগোনা। অনেক রোগীর আত্মীয় এবং নার্সরাও বলছেন, " এতদিন যাদের দেখা যেত না, তাদেরও দেখা যাচ্ছে। " জুনিয়র চিকিৎসক সায়ন মন্ডল বলেন, " রোগী পরিষেবার বিষয় মাথায় রেখে পূর্ণ কর্মবিরতি থেকে আমরা সরে এসেছি, তবে আংশিক কর্মবিরতি চলছে। পরবর্তী মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের পর আগামীদিনের কর্মসূচি জানানো হবে। সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে আন্দোলন জারি থাকবে। "

এদিন দুপুরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সংহতি জানাতে মেডিকেল কলেজে পৌঁছায় মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ এবং নার্সেস ইউনিটের সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখার্জি সহ অন্যান্যরা। কথা বলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে। তাদের পাশে সর্বদা থাকার বার্তাও দিয়েছেন। জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত তারা কোনভাবে মেনে নিতে পারছেন না। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এইভাবে সাসপেন্ড করা ভুল সিদ্ধান্ত সরকারের। পরে মেডিকেল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকে বসেন আগামীদিনে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে। ভাস্বতী মুখার্জি বলেন, " যে কোম্পানীর কালো তালিকাভুক্ত স্যালাইনকে বিভিন্ন রাজ্যে ব্যান করা হয়েছিল, তা কিভাবে চলছিল? তাদের জন্য কি শাস্তির ব্যবস্থা করে প্রশাসন? তা না করে চিকিৎসকদের সাসপেন্ড অনভিপ্রেত ঘটনা। আসলে সরকার তার ব্যর্থতা ঢাকতেই এইভাবে চিকিৎসকদেরকে রোগীদের কাছে শত্রু বানিয়ে দিচ্ছে। অথচ সরকার এক মুহূর্তের জন্য ভাবছে না রোগী পরিষেবা কিভাবে ভালো করা যায় সেই বিষয়ে। এর মাধ্যমে সরকার রোগী এবং চিকিৎসকদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করতে চাইছে। "