নিজস্ব সংবাদদাতা: কোথাও থিম নির্ভর আবার কোথাও সাবেকিআনা, বাঙালির দুর্গাপূজা থেকে যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে এক ঐতিহ্য। কলকাতার শহর থেকে অনেক দূরে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন পুজোতেও এখন লেগেছে আধুনিকতার রং। কোথাও লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। আবার কোথাও প্রাচীন মন্দির পুজোর পাঁচটা দিন সেজে উঠছে রাজস্থানী মন্দির হিসেবে।
তবে ঝাড়গ্রামের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেবীর নানান অলৌকিক উপাখ্যান। কোথাও তিনি কাল ভয়ংকরী আবার কোথাও তিনি বনবিবি। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া থানার ভোল গ্রামের লোকায়ত দেবী অস্ত্ররূপেন সংস্থিতা। দুর্গার নেই কোন মূর্তি তাই তার অস্ত্র তরবারিকেই দূর্গা রূপে পূজা করা হয়। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী তারই মাঝে এক প্রান্তিক চাষীর বাড়িতে তরবারি পুজোর চল রয়েছে।
বংশ পরম্পরায় সেই তরবারী সেই বাড়িতেই স্থান পায়। ৩৫০ বছর আগে দিগর রাজ পরিবারের সদস্যরা রাজার রাজকোষ এবং সীমা রক্ষার প্রহরায় ছিলেন। পাঠান রাজা তাদের পাশের রাজ্য দখলে পাঠিয়েছিলেন। রাজ্য জয় করে ফিরে আসতেই তাদের উপঢৌকন হিসেবে দেওয়া হয় এই তরবারি। সেই থেকে পুজো হয়ে আসছে তর বাড়ির।
স্বপ্নাদেশে দেবী দশভূজা জানান ওই অস্ত্রতেই তার পুজো করতে। রাজ আমলে রাজ পরিবার থেকে আসতো পুজোর যাবতীয় সামগ্রী। ওড়িশা থেকে আগত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দাস তার আমলের স্থাপিত হয়েছিল এই পুজো। রাজ রাজত্ব নেই নেই রাজা। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুজোর পাঁচটা দিনে সমস্ত ঐতিহ্য মেনে এই তরবাড়ির পূজো করা হয়। মাঙ্গলিক মন্ত্র উচ্চারণ এবং নিয়ম মেনে দেবী দুর্গার রূপে সেজে ওঠেন অস্ত্র সংস্থিতা।