ব্যস্ততার কারণে স্কুলে অনুপস্থিত TMC শিক্ষক নেতা! ভাইয়ের স্ত্রীকে দিয়ে করাতেন ক্লাস

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ছড়াল চাঞ্চল্য।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
coversch

নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর : বছরের পর বছর স্কুলে ক্লাস না করেও শিক্ষক হিসেবে নিয়মিত মাইনে তুলেছেন এক তৃণমূল নেতা। মাস শেষে স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতা ভরাট করতেন। নিজে স্কুলে না গিয়ে একজন দামি শিক্ষিকাও রেখেছিলেন। উঠে এল এমন সব তথ্য। 

চন্ডিপুর ব্লকের ভগবানখালী নিউ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক স্বপন প্রধান পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য। ওই তৃণমূল নেতা তারই ভাইয়ের স্ত্রী অমিতা প্রধানকে টিচার হিসেবে রেখে ক্লাস করাতেন। দীর্ঘদিন অনিয়ম চলার পরে জেলাশাসকের কানে খবরটি যায়। জেলাশাসক ডিআই-কে নির্দেশ দেন ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য। ডিআই- এর তরফ থেকে শোকজ লেটার যায় অভিযুক্ত শিক্ষকের হাতে। স্কুলের ছাত্ররাও এক কথায় স্বীকার করে নিয়েছে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক স্বপন প্রধান বলেন, 'অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন সেটা আমার খাতা কলমের রেকর্ড বলবে। আমি নিয়মিত ক্লাস করি। ২০২৩ সাল থেকে আমি জেলা পরিষদ সদস্য। তার আগে তো আমি জেলা পরিষদ সদস্য ছিলাম না। অসুস্থতার কারণে আমি মেডিক্যাল লিভ নিয়েছিলাম। হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমি ছুটির লিখিত আবেদন করতে পারিনি। ফোনে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তার পর থেকে নিয়মিত ক্লাস করছি। চিকিৎসা করে ফিরে আসার পর আমি ছুটির আবেদন করেছি ও মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও জমা দিয়েছি। আমি একটা শোকজ নোটিশ পেয়েছি। তার উত্তরও দেব'।

অপরদিকে প্রধান শিক্ষক নিতাইচরণ মাইতি বলেন, কোনও ডামি শিক্ষিকা এখানে আসতেন না। একজন শিক্ষানুরাগী মহিলা স্বইচ্ছায় মাঝে মধ্যে আসতেন। উনি ক্লাস নিতেন না। কমিটির অনুমতি নিয়ে তিনি মাঝে মধ্যে আসতেন। একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে মাঝে মধ্যে শিক্ষকদের সহযোগিতা ও ছাত্রদের পঠনপাঠনের সুবিধার জন্যে ক্লাস নেওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। উনি অন্য জায়গায় পড়িয়েছেন সেই কারণে কমিটির অনুমতি নিয়ে তাকে মাঝে মধ্যে বাচ্চাদের পড়াতে বলা হয়েছিল বিনা পারিশ্রমিকে'। 

ত্ণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি মৃনালকন্তি সিনহা বলেন, 'স্বপনবাবু একজন সহ শিক্ষকের পাশাপাশি জেলা পরিষদের সদস্য ও দয়িত্বশীল নেতা। শুনেছি বর্তমানে তিনি বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকার কারণে স্কুলের পঠন পাঠনে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য ডামি শিক্ষক দিয়েছিলেন। আমি জানি না অভিযোগ কতটা সঠিক। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আমি তার তীব্র বিরোধিতা করছি'। যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই প্রাথমিকভাবে জানান যে শোকজ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Adddd