নিজস্ব প্রতিনিধি: একদিকে যখন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক সেই সময় উল্টো দিকে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন মেদিনীপুর সদরের একঝাঁক তৃণমূল নেতা-কর্মী। তবে এই যোগদানের জল্পনা চলছিল কয়েক মাস ধরেই। এর আগে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও হয়েছে তাদের। মূলত জুন মালিয়ার বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে তাদের বিজেপিতে যোগদান বলে জানালেন বিজেপিতে যোগদানকারী তৃণমূল কর্মীরা। সোমবার মেদিনীপুরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে যোগদান কর্মসূচি হয়। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। বিজেপির দাবি, ৩০০ জনেরও বেশি তৃণমূলের নেতাকর্মী এদিন যোগ দিয়েছে।
যার মধ্যে রয়েছে তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যা কৃষ্ণা সিং, প্রাক্তন উপপ্রধান তথা পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ কর্মকার, তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নয়ন দে সহ অন্যান্য নেতা কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের পর থেকে দলে অরাজকতা চলছিল। উপর নেতৃত্বকে কোন বিষয় জানালেও গুরুত্ব দিত না। দলে পুরোনো কর্মীদের কোন সম্মানও ছিল না। বালি চোর, মোরাম চোরদের আধিপত্য দলে বিস্তার ঘটেছিল। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই মেদিনীপুর সদরে তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়। জুন মালিয়ার কোন প্রোগ্রামেই অংশ নিত না কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান, উপপ্রধান সহ একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য। নয়ন দে বলেন, "বিধানসভা ভোটে জুন মালিয়াকে জেতানোর পর কোন সম্মান দিত না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেও নিজেকে বড় মনে করতেন। উনি ভাবতেন আমরা ওনার বাড়ির চাকর। যারা মোরাম চোর, বালি চোর তাদেরকে প্রাধান্য দিতেন।"
অন্যদিকে বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, "আমার ভুল থাকলে আমার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেই অভিযোগ জানানোর পরও কোন সুরাহা নেই তৃণমূলে। এখানে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কাঠপুতুল, চেয়ারম্যানও কথা বলতে পারে না। শুধু বিধায়কের ইচ্ছামত এখানে চলে। বিধায়কের যাকে পছন্দ হবে তার মতেই দল চলবে। ফলে গত পঞ্চায়েতে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে জিতেছি। কর্মীদের পাশে সব সময় আছি, আগামী দিনেও কর্মীদের সাথে নিয়ে লড়বো।" বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, চুরি-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তৃণমূলের প্রতি মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। নিজেদের কর্মীরাও দল ছাড়ছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গৌতম দত্ত বলেন, "বারবার দলবদলু ওই নেতারা অনেক আগে থেকেই বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। তারা দলে থেকে দলের ক্ষতি করছিলেন।"