নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম : ঝাড়গ্রামের রোহিনী কিংবা বেলিয়াবেড়া যাওয়ার এখন একমাত্র পথ বড়ামারা সেতু। কিন্তু গত দুদিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে নদীতে জলস্তর বাড়ায় জলের তলায় গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের গোয়ালমারা এলাকার বড়মারা সেতুটি। যার ফলে প্রায় বেলিয়াবেড়া ও ঝাড়গ্রাম শহরের যাওয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পাশাপাশি প্রায় ১০ থেকে ১৫ টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সেতু। কিন্তু ডুলুং নদীতে জল বাড়ার কারণে এই সেতুর উপর দিয়ে জল যাওয়ার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে যানবাহন চলাচল খুব আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে হচ্ছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া কিংবা সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী, রগড়া থেকে ঝাড়গ্রাম শহরে যাওয়ার জন্য এই সেতুর উপর দিয়েই পারাপার করতে হয়। সমস্ত জরুরী পরিষেবার জন্য ঝাড়গ্রাম শহরে আসতে হয় সাধারণ মানুষকে। ফলে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত তিন থেকে চার বছর আগে ওই রাস্তার উপরে একটা সেতু ছিল কিন্তু সেতুর একাংশ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে বিকল্প এই ডুলুং নদীর উপরে একটি অস্থায়ী রাস্তা বানানো হয়। কিন্তু এতেও বিপত্তি। একটু বৃষ্টি হলেই জল ওই বিকল্প রাস্তার উপর দিয়ে পারাপার করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় বহু গ্রামের। তবে স্থানীয়রা ভেঙে যাওয়া সেতুটি মেরামত করে পুনরায় ঠিক করে তোলার আবেদন জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। কারণ প্রত্যেক বছরই বৃষ্টি হলেই ডুলুং নদীতে জল বাড়লে পারাপার বন্ধ হয়ে যায় কজ ওয়ের উপর দিয়ে। ডুলুং নদীতে জল বাড়ায় ঝাড়গ্রাম থেকে জামবনির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ডুলুং নদীতে আরো জল বাড়ছে। এখনো জল নামেনি ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড় ডুলুং নদীতে। ঝাড়খণ্ডের গালুডি থেকে দু'দফায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় নয়াগ্ৰাম, সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুর ব্লকের সুবর্ণরেখা নদীতে বাড়ল জলস্তর। টানা বৃষ্টিতে ভেঙে গেল সুবর্ণরেখার উপর তিনটি ব্রিজ। ফলে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের একাধিক গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সমস্যায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। সুবর্ণরেখার জলের তোড়ে গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লক এবং গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের মহাপাল থেকে জগন্নাথপুর, আসনবনি থেকে জানাঘাটি এবং শ্যামসুন্দরপুর থেকে চোরচিতার ফেয়ারওয়েদার ব্রিজ ভেঙে গিয়েছে। যার ফলে আলমপুর, পিড়াশিমূল, টোপগেড়িয়া, জগন্নাথপুর, কুড়িচামঠ, বাকড়া, তেঁতুলিয়া, মহাপাল, জাহানপুর, আকনা, মালঞ্চা, জানাঘাটি, করতনালা, চোরচিতা, শ্যামসুন্দরপুর, হাতিবাড়ি গ্রামের মানুষজন সমস্যায় পড়েছেন।
সাঁকরাইলের বিডিও রোহন ঘোষ বলেন, ''প্রশাসনের তরফে শুরু হয়েছে নজরদারি। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে মাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে নদীতে মত্স্যজীবীদের মাছ ধরা বা স্নান করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফেয়ারওয়েদার ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় কিছু এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। জল বেড়েছে ঠিক কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।''