নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে কোথাও থিমের পুজো হচ্ছে, আবার কোথাও বিশাল মন্ডপ করে পুজো হচ্ছে। অথচ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় আজও মানুষজন বিভিন্ন নিয়মে শারদ উৎসবে মেতে উঠেন। এখানে কোথাও দেবী রয়েছেন, আবার কোথাও দেবী নেই। কোথাও দেবী অস্ত্র রূপে পূজিত হন, আবার কোথাও মাটির তৈরীর মূর্তিতে ছলনে তার আরাধনা। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর দু'নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া থানার ভোল গ্রামের লোকায়ত পুজোর দেবী ' অস্ত্ররূপেন সংস্কৃতা '।
ভোলগ্রাম এই পুজোকে ঘিরে মেতে ওঠেন দিগার পরিবার সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষ। ওই গ্রামে এক জোড়া প্রাচীন তরবারিকেই দুর্গা রূপে পুজো করা হয়। ভোলগ্রামের প্রান্তিক চাষী দিগার বাড়িতে ওই দুটো তরবালি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। পুরুষানুক্রমে তরবারি দুটি এখন রয়েছে দিগার পরিবারের কাছে।
জানা যায়, আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে রাজ রাজত্বে দিগার পরিবারের সদশ্যরা রাজার রাজ কোষ ও সিমা রক্ষার পহরি ছিল। ৩০০ বছর আগে তার এই দিগার দের পাশের রাজ্য দখলের জন্য পাঠান রাজা সেখানে জয় লাভ করে ফিরলে রাজা তাদের ২টি তরবারি উপহার দেন তা নিয়ে পুজো শুরু করে দিগারেরা। আর সেই থেকে পুজো শুরু হয় পরে রাজা তাদের এই উদ্যোগ দেখে মায়ের পুজোর আদেশ দেন সেখান থেকেই দশভুজার পুজো শুরু হয়। আগে রাজ আমলে রাজ পরিবার থেকে পুজোর সামগ্রহ আসত এখন সে সব নেই নিজেরাই তাদের পূর্ব পুরুষের আদেশ অনুশরনে করে চলেছে পরিবার। ওড়িশা থেকে আগত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দাস প্রহরাজের আমলে স্থাপন হয়েছিল এই পুজো। আজো সেই পুজো হয়ে আসছে কিন্তু রাজ রাজত্ব নেই রাজা ও নেই সধু রয়েছে সেই পুজো। পুজোর চারটা দিন আশেপাশের গ্রামের মানুষ এই প্রাচীন পুজোতে মেতে উঠেন।