নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান মেদিনীপুর। বহু শহীদের আত্মত্যাগ, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সেইসব অমর বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আদর্শ এবং চিন্তাকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য মেদিনীপুরে বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে গড়ে উঠেছিল 'শহীদ প্রশস্তি সমিতি'।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়গুলিতে সেদিন বিপ্লবীদের আবক্ষ মূর্তিগুলি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল জনসাধারণ এবং নাগরিক সমাজ যাতে জাতির গৌরবের ইতিহাসকে স্মরণ, শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে পারে। সেই মূর্তিগুলিকে আড়াল করে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকানের স্টল। টাঙানো হয়েছে বিজ্ঞাপন। এবার সেই গুলিকে সরানোর দাবিতে ডেপুটেশন দিল শহীদ প্রশস্তি সমিতি। সোমবার মেদিনীপুর সদর মহকুমা শাসকের কাছে শহীদ প্রশস্তি সমিতির প্রতিনিধি দল ডেপুটেশন দেয়। উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক ডাঃ প্রাণতোষ মাইতি, দীপক বসু, ডাঃ শতদল পড়িয়া, মানিক পড়িয়া প্রমুখ।
সমিতির অভিযোগ, শহরের ভীমতলাচকে বিপ্লবী রামকৃষ্ণ রায়, নিমতলাচকে ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তির সামনে দোকান বসেছে। বটতলা চকে প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যের আবক্ষ মূর্তি অন্ধকারে রয়েছে। গোলকুঁয়াচকে সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসুর আবক্ষ মূর্তি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে। কালেক্টরেট মোড়ে ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তির উপরে ক্লক টাওয়ারে বাহারি আলোকমালা থাকলেও পূর্ণাবয়ব মূর্তিটি অন্ধকারে রয়েছে। মেদিনীপুর পৌরসভা ইতিমধ্যে পঞ্চুরচক থেকে গোলকুঁয়াচক পর্যন্ত বিপ্লবীদের মূর্তি ও ভাস্কর্যগুলির ঐতিহ্য ও ইতিহাস রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।
তথাপি মূর্তিগুলির সামনে যথপোযুক্ত আলোর ব্যবস্থা করা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দাবিও জানানো হয়েছে। এদিন মহকুমা শাসকের কাছে তারা দাবি করেন, আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে শহরে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তিগুলির সামনে থেকে সমস্ত প্রকার দোকান, বিজ্ঞাপনের কাঠামোগুলিকে সরিয়ে দিয়ে মূর্তিগুলিতে রং, আলোর ব্যবস্থা করা। সমিতির পক্ষে অধ্যাপক মঙ্গল কুমার নায়ক বলেন, "মহকুমা শাসক আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।"