নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিমবঙ্গঃ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে আন্দামান সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আগামী ২৪ শে অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারন করবে।
এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় আগামী ২৩ থেকে ২৫ শে অক্টোবর ভারী থেকে অতি ভারী বৃ্ৃষ্টি হতে পারে সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ১১০ কিমি পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য এলাকায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
এই ঝড় এবং বৃৃষ্টির মোকাবিলায় মৎস্যজীবীদের সতর্কতামলকূ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এক নির্দেশিকাতে মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ কিছু নিয়মাবলি দেওয়া হয়েছে। যেমন,
১) সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে সমুদ্রে মাছ আরোহণ থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। আবহাওয়া দপ্তর কর্তৃক ভালো আবহাওয়ার পূর্বাভাস না পাওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে মৎস্য শিকারের জন্য কোনরকম নৌকা নিয়ে যাবেন না।
২) মাছ ধরার নৌকা গুলোকে নিরাপদ স্থানে (মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র/ মৎস্য বন্দরে) সঠিক ভাবে নোঙর করে রাখুন এবং নিজেরাও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন।
৩) অন্যান্য প্রয়োজনীয় মৎস্য সরঞ্জাম যথা জাল, হাঁড়ি, তাপ নিরোধক বাক্স, যোগাযোগ স্থাপনকারী যন্ত্রাবলি ইত্যাদি নিরাপদ স্থানে রাখুন।
৪) আবহাওয়ার সাম্প্রতিক তথ্য (updated information) শোনার জন্য একটি ব্যাটারি চালিত রেডিও সঙ্গে রাখুন।
৫) ঝড়ের সময় দর্ঘুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ বিল্ডিং থেকে দূরে অবস্থান করুন। প্রয়োজনে পাকা বাড়ি বা ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নিন।
এছাড়াও, নোনা জলের মাছ চাষিদেরও সাইক্লোনের অগ্রিম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। যেমন,
১. বিক্রয়যোগ্য চিংড়িকে পুকুর থেকে জাল দিয়ে অগ্রিম তুলে ফেলতে হবে।
২. পুকুর পাড়ের চারিদিক ভাল করে জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে, যাতে পুকুরের জল বাড়লেও মাছ বেরিয়ে যেতে না পারে।
৩. পুকুর পাড়ের বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলি বিদ্যুৎহীন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. Aerator গুলি পুকুর থেকে তুলে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে।
৫. পুকুর পাড়ের দুর্বল বাঁধ থাকলে সেটিকে অগ্রিম মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. পুকুরে খাদ্য এবং ঔষধ নিয়ন্ত্রিত হারে প্রয়োগ করতে হবে।
৭. মাছের খাদ্য, ঔষধ এবং অনান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী অগ্রিম নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে রাখতে হবে।
৮. বিদ্যুতের অভাবে পাম্পগুলি চালানোর জন্য অগ্রিম ডিজেল মজুদ রাখতে হবে।
৯. ফার্মের সমস্ত কর্মচারীদের নিরাপদ জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. পুকুরের অধিক জল বের করানোর ব্যবস্থা অগ্রিম করে রাখতে হবে।
১১. সাইক্লোনের পরবর্তী সময়ে ফার্মের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় চুন, পটাশিয়াম-পারম্যাঙ্গানেট, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি প্রস্তুত রাখতে হবে।
কোনরকম দুর্ঘটনা বা ক্ষতির খবর পেলে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক বা স্থানীয় প্রশাসনের নজরে তা আনতে হবে।