হরি ঘোষ, সালানপুর: পশ্চিম বর্ধমান জেলার সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের ডোমদোহার উপর ডাঙ্গা এলাকায় দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে এক সিআইএসএফ (কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী) জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম সুনীল পাসওয়ান (৪৫), তিনি ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম বাড়ুই পাড়ার বাসিন্দা। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুনীল পাসওয়ান নিজের কেনা একটি জমি দেখতে ডোমদোহা এলাকায় এসেছিলেন। এই সময় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ একটি মোটরবাইক, মাটিতে ছড়িয়ে থাকা রক্ত এবং কয়েকটি মদের বোতল উদ্ধার করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সুনীলকে দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।সালানপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা হতে পারে। তবে হামলার পেছনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে ডাঙ্গা এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে দুষ্কৃতীদের আড্ডাস্থল হিসেবে পরিচিত। অতীতে এই এলাকায় একাধিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে ডাকাতি, মাদক পাচার এবং সশস্ত্র হামলা। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের টহলদারি এবং নজরদারির অভাবে এই এলাকায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "এই এলাকায় রাতের দিকে বাইরে বেরোনোই ভয়ের। দুষ্কৃতীরা প্রায়ই এখানে জড়ো হয়। পুলিশের উপস্থিতি খুবই কম"। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মোটরবাইক এবং অন্যান্য বস্তুর সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, সুনীল পাসওয়ানের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারে শোকের ছায়া। স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে সুনীল ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান ও কর্তব্যপরায়ণ জওয়ান।
এই ঘটনা পুনরায় সালানপুর ও সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই এলাকায় নিয়মিত পুলিশ টহল এবং কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। সালানপুর ও সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর।