চিনা আলোর দাপটে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ! মুখভার কুমোরপাড়ার

এক একটি মাটির প্রদীপ তিন থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হত।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2024-10-28 at 20.56.46 (1)

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: মোমবাতি, রং-বেরং-এর বাহারি চিনা আলোর দাপটে সংকটে গ্রাম বাংলার মাটির প্রদীপ। কালীপূজার আগে তাই মুখভার চন্দ্রকোনার কুমোরপাড়ায়। দীপাবলির উৎসবে প্রদীপ জ্বালানোটাই চিরাচরিত প্রথা গ্রাম বাংলায়। তবে বর্তমানে চীনা আলোর কোপে বিলুপ্তির পথে সেই মাটির প্রদীপ। ফলে রোজগারের পথ বন্ধের মুখে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা ২ নম্বর ব্লকের বাচকা কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীদের এখন এমনই অবস্থা।

বাজারে আগের মতো চাহিদা নেই মাটির প্রদীপের, কঠোর পরিশ্রম করে কাঁচামালের খরচটুকুও ওঠেনা ওই গ্রামের কুমোর শিল্পীদের। মাটির আকাল বর্তমানে চরমে। তাই অনেকে এই জীবিকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। একসময় এই গ্রামেরই অধিকাংশ পরিবারই প্রদীপ সহ মাটির তৈরি নানা জিনিস তৈরি করে সংসার চালাতো। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা হাতে গোনা। 

এক একটি মাটির প্রদীপ তিন থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হত। এখন তা এক টাকায় বিক্রি করতে হয়। বাজার ছেয়েছে চীনা আলো ও বাহারী মোমবাতিতে। বাজারে কোনঠাসা মাটির প্রদীপ, ফলে চরম সংকটে কুমোর শিল্পীরা। 

সরকারি সাহায্য বা বংশ পরম্পরায় চলে আসা কুমোরপাড়ার শিল্পীদের স্বীকৃতি মেলেনি আজও। তাই আক্ষেপ তাদের চোখে মুখে। সরকারি স্বীকৃতি মিললে বা শিল্পীদের ভাতার ব্যবস্থা হলে কাজ বাঁচিয়ে রাখার তাগিদা বাড়তো দাবি এখনও একাজের সাথে যুক্ত কুমোর শিল্পীদের।

কয়েকবছর আগেও কালীপূজোর আগে নাওয়াখাওয়া ভুলে মাটির প্রদীপ তৈরিতে চরম ব্যস্ততা ছিল কুমোরপাড়ার কারিগরদের। পুরুষদের পাশাপাশি একাজে হাত লাগাতো পরিবারের মহিলারাও। সামনেই কালীপূজা অথচ আগের মতো ব্যস্ততার ছবি উধাও কুমোরপাড়ায়। 

বংশ পরম্পরায় চলে আসা মাটির প্রদীপ তৈরি কাজ ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। গ্রামের বয়স্করা আজও তা টিকিয়ে রাখলেও নতুন প্রজন্মের অনিহা একাজে জানাচ্ছেন কারিগররা। মোমবাতি, চিনা আলোর দাপটে একপ্রকার বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের মাটির প্রদীপ, অন্ধকার নেমেছে কারিগরদের জীবনে।