'মুখ্যমন্ত্রী বলে যা খুশি-রাজার মতো আচরণ করতে পারেন না', সুপ্রিম ধমক

সুপ্রিম কোর্টের রোষের মুখে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

author-image
Aniruddha Chakraborty
New Update
supreme mani .jpg

file pic

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের অধিকর্তাকে নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উত্তরাখণ্ডে। এবার সুপ্রিম কোর্ট থেকে তুলোধনা করা হল মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পুরনো দিনের রাজাদের মতো আচরণ করতে পারেন না বলেই শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়।

জানা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর এক বিতর্কিত আইএফএস অফিসারকে রাজাজি টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ করাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। অভিযোগ, রাজ্যের বনমন্ত্রী ও বন দফতরের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওই আইএফএস অফিসারকে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে।

বুধবার বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিকে মিশ্র ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, আমরা আর সামন্ত যুগে নেই। সরকারের প্রধানরা পুরনো দিনের রাজার মতো আচরণ করতে পারেন না।"

রাজ্য সরকারের তরফে সাফাই দিয়ে বলা হয় যে গত ৩ সেপ্টেম্বর নিয়োগের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এর জবাবে বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, "দেশে জনগণের আস্থা বলে একটা বিষয় আছে। সরকারের প্রধান পুরনো দিনের রাজার মতো হতে পারেন না যে তাঁরা যা বলবেন, তাই-ই হবে। আমরা সামন্ত যুগে বসবাস করি না। তিনি মুখ্যমন্ত্রী বলে যা খুশি করতে পারবেন?"

যে আইএফএস অফিসারকে নিয়োগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ধামী, তিনি আগে জিম করবেট টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর ছিলেন। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তারপরও  কেন ওই আধিকারিকের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর এই অতিরিক্ত ভালবাসা, জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের তরফে হাজির আইনজীবী এএনএস নাদকার্নি দাবি করেন যে ওই আধিকারিককে নিশানা করা হচ্ছে।

শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে জানায় যে ফার্স্ট অফিসার থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং রাজ্যের বনমন্ত্রীও এই আধিকারিকের নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ধামী কারোর কথা শোনেননি।

এরপর সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, "যদি অফিসার থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি, তারপর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং মন্ত্রী প্রথম থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তখন কেন মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রস্তাব খারিজ করছেন বা বিরোধিতা করছেন, তার ব্যাখা থাকা উচিত। যার কিছুই গুণ নেই, তার জন্য একজন ভাল অফিসারের বলিদান দিতে পারেন না। যদি বিতর্কিত আধিকারিক কিছু না-ই করে থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে কেন? কোনও প্রাথমিক প্রমাণ না থাকলে, কখনও কারোর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয় না।"