নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়াঃ গোটা রাজ্যজুড়েই ভারী বৃষ্টি (Heavy Rainfall) হচ্ছে। একরাতের বৃষ্টিতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে শুরু করে মানুষের ঘরবাড়ি এক প্রকার জলের তলায় চলে গিয়েছে। এদিকে ফুঁসছে একের পর এক নদীও। এরই মাঝে জলের প্রবল তোড়ে বসে গেলো কংসাবতী নদীর ওপর থাকা সেতুর একাংশ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরুলিয়া শহরের সঙ্গে আড়শা ব্লকের অসংখ্য গ্রামে মানুষের। পুরুলিয়ার (Purulia) আড়শা ব্লকের বেলডী সেতুর একাংশ ভেসে গিয়েছে। যার ফলে চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে মানুষের।
ভরা বর্ষার (Monsoon Season) সময় হলেও দীর্ঘদিন ছিল অনাবৃষ্টি। এদিকে হঠাৎ করেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের কারণে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গতকাল রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি নামে । অযোধ্যা পাহাড় সহ আড়শা ,ঝালদা ,জয়পুর, কোটশীলা ব্লকের বিভিন্ন ছোট বড় নদী নালার জল এসে মেশে কংসাবতী নদীতে, তৈরি হয়েছে হড়পা বানেরও। আর সেই হড়পা বানের জলের চাপে বাম জামানায় তৈরি হওয়া বেলডী সেতুর একাংশ হঠাৎ বসে যায়। যার ফলে এই মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আড়শা ব্লকের বেলডী সহ একাধিক অঞ্চলের । যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে তৎপর হয়েছেন স্থানীয় মানুষ । সেতুর দুই প্রান্তে বাঁশের ব্যারিকেড করে দেন স্থানীয় মানুষজন। এদিকে কংসাবতীর ওপর তৈরি হওয়া সেতুর এই পরিস্থিতির জন্য সমস্যায় পড়েছেন ঐ সমস্ত এলাকার মানুষজন। সেতুর উপর দিয়ে যেখানে ১৫- ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা যেত, সেখানে বর্তমানে ঘুরপথে প্রায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।
সেতুর এই দুরবস্থার জন্য উঠছে একাধিক প্রশ্ন। স্থানীয় মানুষ অভিযোগ করছেন অবাধে অবৈধভাবে কংসাবতী নদী থেকে বালি উত্তোলনের কারণে সেতুটি বসে যায়। বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। এই সেতুটির অদূরেই রয়েছে বেলটি বালিঘাট। সেখান থেকে বৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হলেও সেতুর আশপাশ অঞ্চল থেকে অবাধে বালি কারবারিরা অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ করেন। বিষয়টি কি প্রশাসনের নজরে নেই, যদি থাকে তাহলে এতদিনে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয় নি কেন? নাকি প্রশাসনের একাংশের প্রচ্ছন্ন মদতে চলে এই বালি উত্তোলনের কাজ? সে প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আড়শা ব্লকের বেলডী সহ একাধিক অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরাও।