নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভোটের আগে (Panchayat Vote) ও পরে সব মিলিয়ে ঝরে গেল ২৪টি তরতাজা প্রাণ। কারোর বোমার আঘাতে, কারোর গুলির আঘাতে আবার কারোর মৃত্যু হয়েছে পিটুনির কারণে। পঞ্চায়েত ভোটের বাংলা যেন কুরুক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের দখলে যেন রক্তের হোলি হচ্ছে।
একটা সাধারণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য ২৪টি তরতাজা প্রাণ চলে গেল। তাহলে কোথায় রয়েছে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা? ভোটের দিন সকালেও একের পর এক জেলায় চলছে বোমাবাজি, গুলি। ভয়ে কাঁপছেন ভোট দিতে আসা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভোট কর্মীরা।
এদিকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন রাজ্য পুলিশের কর্মীরা। সকলের রোষের মুখে পড়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সকলের একটাই প্রশ্ন, এ কী ভোট হচ্ছে বাংলায়? কোথায় রয়েছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা? ভোটের নামে কি খালি সন্ত্রাসই কাম্য মানুষের?
জেলায় জেলায় একাধিক বুথ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠছে। সেইসঙ্গে প্রিসাইডিং অফিসারদের মারধর অবধি করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে শাসানি বলেও অভিযোগ উঠছে। আবার কোথাও কোথাও ভোটারদের চরমভাবে প্রভাবিত করারও অভিযোগ উঠছে।
কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, কোথায় পুলিশ? সকলের এখন একটাই প্রশ্ন। এদিকে শাসক দল ও বিরোধী দলের নেতা মন্ত্রীরা ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে একে অপরকে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছেন। চলছে শাসক দলের চোখ রাঙানিও। এদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছে জেলার পর জেলা। এমনকি বন্দুক উঁচিয়ে দুষ্কৃতীদের তাড়া করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
এছাড়া কোথাও কোথাও সময়ের আগেই ভোট বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে, আবার ছাপ্পারও অভিযোগ উঠছে। সবমিলিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট মোটেই শান্তভাবে হচ্ছে না।
এদিন শনিবার ভোটের দিন সকালেই ভোট-হিংসার বলি হতে হয়েছে ৭ জনকে। জানা গিয়েছে, আজ সকাল সকাল মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ৮ নম্বর রায়পুর অঞ্চলের কুপিলা বিশ্বাসপাড়ায় গুলিতে জখম হয়েছেন দু’জন শাসকদলের কর্মী-সমর্থক।
এদিকে এই হামলায় অভিযোগের তীর জোটকর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের রানিনগরের কোমনগর ৬৭ নম্বর বুথে ব্যাপক বোমাবাজির খবর অবধি মিলেছে। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন একাধিক জন। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এদিকে রাজ্যে একের পর এক সন্ত্রাসকে ঘিরে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে মানুষের নিরাপত্তা। প্রশ্ন উঠছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাকে ঘিরেও। আর কত রক্ত ঝরবে মানুষের? স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।