নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই পৌরসভায় গেরুয়া ঝড়। তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পদাধিকারী নেতারা নিজেরা নিজের ওয়ার্ডেই হেরেছেন। এই পৌরসভা থেকে আরামবাগ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী অরূপ কান্তি দিগার ১২১৯ টি ভোটে লিড পেয়েছেন। পিছিয়ে তৃণমূল প্রার্থী মিতালী বাগ। পৌরসভার দশটি ওয়ার্ডের মধ্যে ২ ও ৮ নম্বর বাদে বাকি ১, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে লিড পেয়েছে বিজেপি। আর সেই নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে সারা পৌরসভাজুড়ে। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে পৌর এলাকাজুড়ে। কেন এই হার?
তৃণমূল সূত্রে খবর, সারা রাজ্যে মমতার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলেও ক্ষীরপাই পৌরসভার এই পরাজয় বর্তমান নেতৃত্বের জন্য। ক্ষীরপাই পৌরসভার ভোট হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নয়, বর্তমান পৌর তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের লিড পাওয়া ২টি ওয়ার্ডে সংখ্যালঘু ভোট বেশি থাকায় মান বেঁচেছে তৃণমূলের, এমনটাই জানা যাচ্ছে। তৃণমূলের টাউন সভাপতি বীরেশ্বর পাহাড়ি তার নিজের ওয়ার্ড ৩ নম্বরে ১০৭ ভোটে হেরেছেন। তৃণমূলের টাউন সহ-সভাপতি তারকনাথ মন্ডল তার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৭১টি ভোটে হেরেছেন। ক্ষীরপাই পৌরসভার বাম আমলের চেয়ারম্যান ও বর্তমানে তৃণমূলের চেয়ারম্যান দুর্গাশঙ্কর পান তার নিজের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৩১০ভোটে পিছিয়ে আছেন। দুর্গাবাবুর হোমওর্য়াড ১০ নম্বর, সেখানেও তৃণমূল ৯২ ভোটে পিছিয়ে। ক্ষীরপাই পৌরসভায় তৃণমূল বিজেপির থেকে মোট ১২১৯ ভোটে পিছিয়ে আছে।
এই বিষয়ে ক্ষীরপাই পৌর তৃণমূল নেতৃত্বের সাফাই, "বিজেপি ভুল বুঝিয়ে টাকা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। আমাদের কিছু নেতৃত্ব আগে তৃণমূল করত, বর্তমানে বিজেপির সঙ্গ দেওয়ায় এই রেজাল্ট হয়েছে"। অন্যদিকে বিজেপির নেতা গৌতম ভট্টাচার্য দাবি করেন, "বর্তমান তৃণমূল নেতৃত্বের সীমাহীন দুর্নীতি, কাটমানি, সবার জন্য গৃহ প্রকল্পে দুর্নীতি করার ফলশ্রুতি। আর একটা আঞ্চলিক দল হয়ে তৃণমূলের যে পয়সা আছে সারা ভারতবর্ষের কোনও দলের কাছে সেই অর্থ নেই। তাই বিজেপি অর্থ দিয়ে ভোট করেছে এই যুক্তি ঠিক নয়। কারণ ক্ষীরপাই পৌরসভার মানুষ এই দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল পরিচালিত পৌরবোর্ড চাইছে না এটা প্রমাণিত"।
ক্ষীরপাই পৌরসভার তৃণমূলের এই হার নিয়ে তৃণমূল দলের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ও শুরু হয়েছে পর্যালোচনা। এখন দেখার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে এই হারের দায়িত্ব বর্তমান নেতৃত্বরা নেয় কিনা।