নিজস্ব সংবাদদাতা: এএনএম নিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে, আরজি কর মেডিকেল কলেজের ঘটনা সম্পর্কে বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার বলেছেন, "আর জি কর একটি বহু পুরোনো মেডিকেল কলেজ। আমরাও সেখানে পড়াশোনা করেছি। আমরাও রাতে কাজ করেছি। নীচে নেমে চা খেয়েছি। আমাদের সময় কিন্তু কারোর গায়ে হাত তোলার সাহস পর্যন্ত হয়নি। আজ যে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে, তা বলার মত নয়। একটি পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে এখানে ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। টানা ৩৬ ঘন্টা তার ডিউটি করবার পর কোনও রেস্টরুম নেই। ডাক্তারের থাকার জায়গায় তুলো, গজ এসবে ভর্তি। একটা জায়গায় যে একটি রেস্ট নিতে এসেছে, সেখানে তার নিরাপত্তা নেই। একজন রোগীর সঙ্গে যদি বাড়ির কোনও লোকজন দেখা করতে চায় তবে কিন্তু, তাকে একাধিক নিরাপত্তার অক্ষের সম্মুখীন হয়ে তাকে ভেতরে আসতে হয়। এতগুলো নিরাপত্তা পেরিয়ে একজন মহিলা ডাক্তারকে রাত্রেবেলা খুন এবং ধর্ষণ করবার সাহস কার আছে? নিশ্চয়ই প্রশাসনের সঙ্গে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার হৃদ্যতা ছিল। নয়তো বিষয়টা তার কাছে এতটা সহজ ছিল না। শাসকদলের তাবেদারি যারা করে তাদের দৌরাত্ম শুরু হয়ে গেছে সর্বত্র। তারা যাকে মনে করে সেই রোগীকে নেয়, বাকি রোগীকে ফিরিয়ে দেয়। এই যে পরিবেশ বদল, তার দায় কে নেবে? যে মেয়েটার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়াতেই শেষ হয়ে গেল তার দায় কে নেবে? সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী নাকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? তারা কি সেই মেয়েটার বুড়ো বাবা আমাকে মেয়েটার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারবে?"
এই সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "উনি অসত্য কথা বলেছেন। উনি প্রথমেই বলে দিয়েছেন যে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কার মাথা থেকে বেরিয়েছে এই কথাটা? এত পরিশ্রম করে মেয়েটি এই জায়গায় এসেছিল। সাধারণ ঘর থেকে দুবার নিট ক্লিয়ার করা এত সহজ কথা নয়। সে কোনদিনও বিয়ে বাড়ি যায়নি, বন্ধুদের সঙ্গে একটা সিনেমা পর্যন্ত দেখেনি। মেয়েটির শর্বদা নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়েছে। তবে না সেই জায়গায় এসেছে। আত্মহত্যা বলে চালাবার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে কোন ক্যামেরা নেই এবং যে ক্যামেরা আছে সেই ক্যামেরাগুলো কিন্তু কাজ করে না। এখনও ঝুল পড়ে ভরে আছে। হাসপাতালে কোনও ডাক্তার, সিভিক ভলেন্টিয়ার, কোনও কর্মী কাউকে তল্লাটে পাওয়া যায়নি। নিজের গাফিলতিগুলোকে ঢাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন এই ধরণের কথা বলছে। সঠিকভাবে দেখতে গেলে বিকেল চারটের পরে কোনও পোস্টমর্টেম করা হয় না। সেখানে ছোটো আঘাত চেক করা যায়না। আমি নিজে এই বিষয়ে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি মুখে বলছেন, কিন্তু কাউকে ধারে কাছে যেতে দিচ্ছেন না।
কারণ তিনি তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং ঘোটালাকে ঢাকা দিতে চাইছেন। তিনি জানেন যে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভেতরে কত দুর্নীতি রয়েছে। গত দুই মাসে পাঁচবার সুপার চেঞ্জ হয়েছে আরজি করে। যেখানে হাত দেবেনা সেখানেই পয়সার খেলা। এই বিষয়গুলোকেই ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এরকম মন্তব্য করেছেন।"