নিজস্ব প্রতিনিধি: এবার সাইবার প্রতারণার শিকার হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লকের কঙ্কাবতীর এক ব্যক্তি। চঞ্চল বারিক নামে ওই ব্যক্তি স্থানীয় একটি গ্যাস দোকানে কাজ করেন। তারই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে দু'দফায় টাকা উধাও। প্রথম দফায় টাকা তোলা হলেও ফোনে ম্যাসেজ আসেনি বলে অভিযোগ। দ্বিতীয় দফার টাকা তোলার পর ম্যাসেজ ঢুকতেই নড়েচড়ে বসেন তিনি। প্রথম দফায় ম্যাসেজ এলে সজাগ হতে পারতেন বলে দাবি তার। ব্যাঙ্কের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে দফায় দফায় গায়েব হচ্ছে টাকা। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে সাইবার আধিকারিকদের। সমস্যায় পড়ছেন গ্রাহকরা। মেদিনীপুর সদর ব্লক এবং নারায়ণগড় এলাকার দুই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে দু'দফায় গায়েব প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা। বায়োমেট্রিক প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বলে দাবি প্রতারিতদের। মেদিনীপুর সদর ব্লকের কঙ্কাবতী এলাকার বাসিন্দা, পেশায় গ্যাস দোকানের কর্মী চঞ্চল বারিকের দুই দফায় খোয়া গেছে টাকা। চলতি মাসে ৭ এবং ১৭ তারিখ দুই দফায় মোট ১৮,৪০০ টাকা গায়েব হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি সাইবার পুলিশ ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানিয়েছেন।
চঞ্চল বাবু বলেন, "টাকা তোলার ম্যাসেজ ফোনে আসার পরই আমি প্রশাসনের নম্বরে ফোন করি। বিষয়টি জানানো হলে আমাকে বলা হয় আধার ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু আমি জানাই অনলাইনে কোনোদিন টাকা তুলিনি। তখন আমাকে বলেন কোথাও আধার কার্ড ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়া হয়েছিল কিনা। আমি জানাই মাসখানেক আগে মেদিনীপুর কালেক্টরেটে জমি রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে আধার ও বায়োমেট্রিক দেওয়া হয়েছিল। তখন আমাকে বলেন, ওখান থেকেই হতে পারে। পরে আমি ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারি এর আগেও ওই পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে। অথচ কোনো ম্যাসেজ আসেনি ফোনে।" ব্যাঙ্কের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন চঞ্চল বাবু। তিনি বলেন, "ম্যাসেজ ঢুকলে আমি সতর্ক হতে পারতাম। সম্পূর্ণ ব্যাঙ্কের গাফিলতি"। অন্যদিকে দু'দফায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হল নারায়ণগড় ব্লকের বাখরাবাদ এলাকার বাসিন্দা দীপঙ্কর রানার। ব্যবসায়ীর দাবি, দু'দফায় অ্যাকাউন্ট থেকে কুড়ি হাজার টাকা গায়েব হয়েছে। তবে কিভাবে এই টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হল তা অজানা। ব্যবসায়ী দীপঙ্কর রানা জানাচ্ছেন, বাখরাবাদ বাজার এলাকায় তার স্টেশনারির দোকান আছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ও ১৭ সেপ্টেম্বর দু'দফায় অ্যাকাউন্ট থেকে দশ হাজার করে মোট কুড়ি হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে তার বক্তব্য, তিনি কাউকে টাকা পাঠাননি বা কোথাও থেকে টাকা তোলেননি। তারপরেও এই ঘটনা। তিনি জানাচ্ছেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ব্যাঙ্কের পাশবই আপডেট করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরেই ব্যবসায়ীর মাথায় হাত। বিষয়টি জানাতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে টাকা তোলার বিষয়টি বন্ধ করে দেন। ব্যাঙ্ক ব্যবসায়ীকে জানিয়েছে, আধার নম্বর ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। ব্যাঙ্কের এই বক্তব্য মানতে নারাজ ব্যবসায়ী। দীপঙ্কর বলেন," কোথাও আমি ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে টাকা তুলিনি। তারপরেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ব্যাঙ্কে টাকা রাখার পরেও নিরাপত্তা কোথায়।" ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।