নিজস্ব সংবাদদাতা: দীর্ঘ কয়েকশো বছর ধরে বংশ-পরম্পরায় চলে আসছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ব্লকের নোহারি গ্রামের বসু পরিবারের দুর্গা পুজো। বনেদি বাড়ির এই পুজো শুরু হয়ে যায় মহালয়ার দিন থেকে। প্রতিপদের দিন, মূল মন্দিরের পাশে বেল গাছের তলায় মায়ের পুজোর মধ্যে দিয়েই শুরু হয়, দেবী দুর্গার আবহান।
পঞ্জিকা মতে মুল পুজো শুরু হয় ষষ্ঠী থেকে নবমীর সন্ধিক্ষণ হয়ে দশমীর বিসর্জন। বসু পরিবারের এই পুজো বৈষ্ণব মতে হয়। বনেদি বাড়ির এই পুজোতে কোনো বলি হয়না। একেবারে বৈষ্ণব মতে বসু পরিবারের পুজোর আলোচনা হয়। এই পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যরাই কর্মসূত্রে বর্তমানে বাইরে থাকেন। পূজোর এই পাঁচ দিন প্রত্যেকেই বাড়িতে আসেন মায়ের আরাধনা করতে।
প্রথমে এই মন্দিরটি শিলাবতী নদীর তীরে অবস্থিত ছিল, বর্ষা কালে মন্দিরের মধ্যে জল ঢুকে যাওয়ায় অসুবিধে হত পুজোর। তাই সেখান থেকে এতে নোহারি গ্রামে বসু পরিবারের দালানের প্রতিষ্ঠা করা হয় মায়ের মন্দির। বৈষ্ণবী মতে পুজো হলেও, সন্ধি পূজার সময় সাত্র মন্ত্র পাঠ করেন।
তবে এই বনেদী বাড়ির উৎসব কৌণজ থেকে। সেখান থেকে তিনজন কায়স্থ আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামে। পরবর্তীকালে সেখান থেকে হুগলির খানাকুলে এসে বসবাস শুরু করে। একেবারে শেষ প্রজন্মের মানুষজন হুগলির থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতাতে উঠে আসেন তারা।
খাল ও নদী দিয়ে ঘেরা এই বসু পরিবারের বাসভবন, যার মধ্যে রয়েছে দুর্গা মন্ডপ। দূর্গা মন্ডপের পাশাপাশি রয়েছে রাধা কৃষ্ণের মন্দিরও। গড়বেতার এই বনেদি বাড়ির পুজোতে সপ্তমীর দিন, পরিবারের প্রতিষ্ঠিত পুকুর থেকে পালকিতে করে নবপত্রিকা ও কলাবউ স্নান করিয়ে নিয়ে আসা হয় মন্দিরে। বসু পরিবারের এই ঐতিহ্যবাহী কয়েক শতকের দুর্গাপুজো গড়বেতার আদিপুজো বলেই মনে করা হয়।