নিজস্ব প্রতিনিধি, বালুরঘাট: অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মাঝে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার রাস্তায় বাংলাদেশ। আতঙ্ক নিয়ে হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরছেন ভারতীয়রা। বন্ধ পণ্য রপ্তানি চালু না হলেও পণ্য আমদানি-রপ্তানি চালুর জন্য বাংলাদেশের তরফে মিলছে আশ্বাস। বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয় লরি ভারতে ফিরলে ফের পণ্য রপ্তানির আশ্বাস ভারতীয় এক্সপোটার্সদের।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের উত্তেজক পরিস্থতির আঁচ সোমবার আছড়ে পড়েছিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের হিলিতে। এপার থেকে সেই দৃশ্যগুলির সাক্ষী হয়েছিল ভারতীয়রাও। অপরদিকে পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাকগুলি কয়েকদিন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল ভারতের হিলির ট্রাক টার্মিনাসে। উল্টো দিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে যাওয়া ট্রাকগুলি ভারতে না ফেরার কারণে উদ্বেগ বাড়ছিল ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। এমত অবস্থায় বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থতির কারণে চিন্তার পারদ বাড়ছিল সীমান্তের কাঁটাতারের এপারে থাকা ভারতীয়দেরও। যদিও মঙ্গলবার সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরে পরিস্থতির কিছুটা বদল ঘটতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে হিলি সীমান্তের শূণ্যরেখায় এসে বিডিআর এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ফের বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির জন্য অনুরোধ জানায়। অনুরোধের প্রেক্ষিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয় লরিগুলির পণ্য খালাস করার ব্যবস্থা করে লরিগুলিকে ভারতে ফেরৎ পাঠানোর অনুরোধ জানান বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের। হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টম ক্লিয়ারিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রাজেশ কুমার আগরওয়াল জানিয়েছেন যে বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে আটকে থাকা কিছু লরি ভারতে ফিরলে তবে তারা ফের পণ্য রপ্তানি করবেন। বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে গিয়ে আটকে থাকা ১টি ট্রাক মঙ্গলবার হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরে। সেই সঙ্গে লরির চালক ও খালাসি সমেত মোট ১০৭ জন বাংলাদেশ থেকে এদিন ভারতে ফিরেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টম ক্লিয়ারিং এজেন্ট এসোসিয়েশন-এর যুগ্ম সম্পাদক ধিরাজ অধিকারী জানিয়েছেন, 'পণ্য খালাস না হওয়ায় এখনও বাংলাদেশে আটকে রয়েছে ভারতের ৮৮টি ট্রাক'। অপরদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে বাংলাদেশে ফেরার জন্য ভারতের হিলি-র অভিবাসন দপ্তরের সামনে বাংলাদেশীদের ভীড় দেখা গেছে। এদিন বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান জানিয়েছেন যে বাংলাদেশে গাড়ি খুব কম চলছে। তার বক্তব্য, মঙ্গলবার থেকে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। অন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে আতঙ্ক নিয়ে বাংলাদেশ থেকে এদিন ভারতে ফেরা বালুরঘাটের কুন্ডু কলোনী এলাকার বাসিন্দা পার্থ অধিকারীর বক্তব্য তিনি এবং তার একজন শিষ্য কিছুদিন পূর্বে একটি নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশের শিবগঞ্জে গিয়েছিলেন। তার দাবি সেখানে গিয়ে তিনি তান্ডবের মাঝে পড়েন। সেখানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে ও প্রাণ বাচাতে তিনি নদীর পাশে থাকা একটি ঝোপে আশ্রয় নেন। উত্তপ্ত বাংলাদেশের দৃশ্য স্বচক্ষে দেখে তার বক্তব্য বেঁচে থাকতে তিনি আর কোনোদিন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন না। সোমবারের পর মঙ্গলবারও ভারতের হিলি সীমান্তে ছিল ভারতের বিএসএফ-এর কড়া প্রহরা। নজর রয়েছে জেলা প্রশাসনেরও।