নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: আবাস যোজনা নিয়ে হাজার হাজার অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কোথাও বঞ্চনা তো কোথাও ভুয়ো প্রাপক। বারবার মুখ খুলেছে বিরোধীরা। এবার ধরা পড়ল যোগ্য প্রাপক হওয়া সত্ত্বেও আবাস যোজনা থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ও একই সাথে আবাস যোজনায় ভুয়ো প্রাপকের বাড়ির কথা এল সামনে। সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির পর থেকে প্রাপকের দেখা না পাওয়ায় অবশেষে এলাকাবাসী সেই বাড়ি তুলে দেয় অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের হাতে। স্থানীয় মানুষ থেকে পঞ্চায়েত সদস্য কেউ চেনে না প্রাপককে। অথচ সরকারি আবাস যোজনার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তার নাম। মেদিনীপুর সদর ব্লকের তলকুই তোলাপাড়া এলাকায় দুই চিত্র দেখা গেল।
দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার হরিমন্দিরে চলছিল তলকুই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। তবে সমস্যা হচ্ছিল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর থেকে সহায়িকার। এই এলাকাতেই বছর কয়েক আগে তৈরি হয় স্বপন বাগ নামে এক ব্যক্তির সরকারি আবাস যোজনার বাড়ি। তবে বাড়ি তৈরির পর থেকে দীর্ঘদিন দেখা যায়নি তাকে। সরকারি বাড়ির দাবিদার না থাকায় এলাকাবাসী বাড়ি তুলে দেয় অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীদের হাতে। বছর কয়েক ধরে সরকারি আবাস যোজনার বাড়িতেই আছে তলকুই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার। প্রসূতি মা ও শিশু মিলিয়ে বর্তমানে সেখানে থাকছে প্রায় ৮০ জন। বাড়ির একটি কামরায় পড়ছে শিশুরা, অন্য কামরাটি হল স্টোর রুম।
এদিকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঠিক উল্টোদিকেই রয়েছেন এক অশীতিপর বৃদ্ধা মন্টি মান্ডি। পিছিয়ে পড়া সমাজের এই বৃদ্ধার মাথার ওপরে রয়েছে একটা ভাঙাচোরা এডবেস্টার। আর সেইখানেই বাস করেন তিনি। সরকারি সুবিধা বা আবাস যোজনার বাড়ি কিছুই পাননি তিনি। অভিযোগ, ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়। ভোট শেষ হলেই বেমালুম ভুলে যায়।
বৃদ্ধা যে আবাস যোজনা বা অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার যোগ্য তা মানছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে এলাকাবাসী। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের সাফাই, তার প্রয়োজনীয় নথি নেই বলেই সরকারি সুবিধা দেওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন দুয়ারে সরকার থেকে শুরু করে নানা সরকারি বন্দোবস্ত থাকলেও কেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উদ্যোগ নেয়নি? এবারেই নাকি সমস্ত বন্দোবস্ত হবে বলে দাবি করলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রিতা মাইতি।
গ্রামবাংলায় এমন আরো কত ছবি লুকিয়ে রয়েছে সেই নিয়েই হাজার অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়ে গেছে।