নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুরঃ আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান দেবী পক্ষের সূচনা। আকাশে বাতাসে মায়ের আগমনী বার্তা। মা'কে স্বাগত জানানোর সাথে সাথেই, ঐতিহ্য মেনে মহালয়ার পবিত্র ভোরে পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন আপামর বাঙালি। নদীতে ডুব দিয়ে পিতৃ পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় এই তর্পণ করা হয়। মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে গান্ধী ঘাটেও বরাবরের মতোই রীতি ও ঐতিহ্য মেনে তর্পণে অংশ নিলেন হাজার হাজার মেদিনীপুর শহরবাসী। পুলিশ ও পৌরসভার তরফেও বরাবরের মতোই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে এদিন। দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেদিকে কড়া নজর পুলিশ ও প্রশাসনের। কংসাবতী নদীতে স্পিড বোট নিয়ে চক্কর কাটলেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
মহালয়ার ভোরে পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে 'তর্পণ' শেষেও তিলোত্তমার জন্য 'বিচার' চাইতে ভুললেন না শহরবাসী। কোতবাজারে এক পুণ্যার্থী তর্পণ শেষে নদীর পাড়ে উঠে সাংবাদিকদের মখোমুখি হয়ে বলেন, " পিতৃ পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করলাম প্রতি বছরের মতোই এবারও। তবে, দেবী পক্ষ বা মাতৃ পক্ষের সূচনায়, এবার মায়ের কাছে এক বিশেষ প্রার্থনাও করব। আমাদের 'তিলোত্তমা' যেন বিচায় পায়! এই ঘৃণ্যতম কাজের সঙ্গে যুক্ত কোন অপরাধী যেন ছাড় না পায়। এটাই প্রার্থনা করি মায়ের কাছে। "
অন্যদিকে, তর্পণ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মেদিনীপুর পৌরসভার আধিকারিক শৈবাল গিরি বলেন, " আমার বাবাসহ বংশের পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করলাম। সেই সঙ্গে, সারা বছর যেন আমাদের ২ লক্ষ মেদনীপুরবাসী সুস্থ থাকেন, মায়ের কাছে সেই প্রার্থনাও করলাম। মেদিনীপুর যেন ডেঙ্গু মুক্ত থাকে, শহরবাসী যেন সুস্থ থাকেন; আজকের দিনে সেই প্রার্থনা আর চেষ্টাই থাকবে আমাদের। "
তিনি মনে করিয়ে দেন, ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে কংসাবতী নদীর এই ঘাটেই 'জাতির জনক' মহাত্মা গান্ধীর চিতাভস্ম ভাসিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। সেজন্যই এই ঘাটের নাম হয়েছে গান্ধীঘাট। এদিন, মহাত্মা গান্ধীর ১৫৬তম জন্মজয়ন্তীতে গান্ধীঘাটে থাকা তাঁর আবক্ষ মূর্তিতে মালা ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধাও জানানো হয় পৌরসভার তরফে।