বৈশাখী গাজনে শরবতের ব্যাবস্থা আফসার- আজাদরার!

বেলিয়া শিব মন্দিরে প্রতিবছরই এমন দিনে বৈশাখী গাজন উৎসব হয়ে থাকে। সেইমতো গাজনের জল ঢালা কর্মসূচিতে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশেরও নজর ছিল।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
sarbat

শরবতের আয়োজন

দিগ্বিজয় মাহালী,  মেদিনীপুর : বৈশাখী গাজনে মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেলিয়া শিব মন্দিরে জল ঢালতে ধেড়ুয়ার কংসাবতী নদী থেকে বাঁকে, মাথায় জল নিয়ে হেঁটে আসছিলেন ভক্তরা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুসলিম কমিটির সদস্য আফসার, আজাদরা তাদের হাতে শরবতের গ্লাস তুলে দিলেন। সম্প্রীতির এই চিত্র দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলিয়া এলাকায়।

বেলিয়া শিব মন্দিরে প্রতিবছরই এমন দিনে বৈশাখী গাজন উৎসব হয়ে থাকে। সেইমতো গাজনের জল ঢালা কর্মসূচিতে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশেরও নজর ছিল। মুসলিম কমিটির পক্ষে সেখ আফসার বলেন, "আমরা সবাই পাশাপাশি বসবাস করি। সকাল হলেই সবার সাথে দেখা হয়। প্রয়োজনে সবাই সবার পাশে থাকি। দুর্গা পূজা, সরস্বতী পূজাতে যেমন আমরা অংশগ্রহণ করি, তেমনই ঈদেও তারা আমাদের সহযোগিতা করেন। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। যারা বাইরে থেকে গ্রামের এই সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করে তারা সফল হয়নি।" গাজন কমিটির পক্ষে সুজিত মাহাত বলেন, "প্রতিবছরই শিবের ভক্তদের জন্য ওনারা শরবতের ব্যবস্থা করেন। সমস্ত পূজা পার্বনে আমরা সবাই মিলেমিশে থাকি।" বর্তমান সময়ে বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে অভিযোগ তুঙ্গে। এদিনের চিত্র দেখে অনেকেই বলছেন, দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতি যেন বিভাজনের রাজনীতির গালে সপাটে চড় মারলো। বিজেপির মন্ডল সভাপতি সুজিত জানা বলেন, "খুবই ভালো, বিগত কয়েকবছর ধরে ওই এলাকার মানুষজন এভাবেই সম্প্রীতি বন্ধনে আবদ্ধ রয়েছেন।" এসইউসিআই-এর জেলা সম্পাদক নারায়ণ অধিকারী বলেন, ''শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকীকরণের নীলনক্সা সহ সারা দেশ জুড়ে যেভাবে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির চেষ্টা চালাচ্ছে, এই চিত্র তাদের কাছে বেদনাদায়ক।" যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সন্দীপ সিংহ বলেন, "মানবতার ধর্মই সবচেয়ে বড়। আমরা তো এই মেলবন্ধনই চাই। বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সাম্প্রদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে এই সম্প্রীতি বজায় থাকুক।"