নিজস্ব সংবাদদাতা: দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র সরকার এই রাজ্যে বন্ধ রেখেছে আবাস যোজনার টাকা। এই নিয়ে বিস্তর আন্দোলন করেছে তৃণমূল। পরবর্তীতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী শুরু হয়েছে সার্ভে। রাজ্য প্রশাসনের সার্ভের প্রতিনিধিরা গ্রামে গ্রামে যেতেই দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু হল এবার।
এলাকাবাসীর সঙ্গে সেই বিক্ষোভে সামিল হলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং জন-প্রতিনিধিরা। তাদের অভিযোগ যে শর্ত রয়েছে ঘর পাওয়ার তাতে করে কেউ ঘর পাবে না। কেন্দ্র সরকারের সার্ভে অনুযায়ী যাদের নাম ছিল তাদের প্রত্যেককে ঘর দিতে হবে। সার্ভে করতে না পেরেই ঘুরে গেলেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। যে ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
মানুষের কাছ থেকে ঘরের টাকা নিয়ে রেখেছে তাই ভয়, খোঁচা বিরোধীদের। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। সোমবার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের মালিওর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তালসুর গ্রামে রাজ্য সরকারের আবাস যোজনা প্রকল্পের জন্য সার্ভে করতে আসেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। সেখানে এলাকাবাসীর চরম বিক্ষোভের মুখে পড়েন তারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় অনেকের ঘর ক্ষতি-গ্রস্ত হয়ে ছিল। পরবর্তীতে কেন্দ্র সরকারের আবাস যোজনার সার্ভের তালিকায় তাদের নাম ছিল। কিন্তু তারা কেউ ঘর পায়নি। দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের দাবি কেন্দ্র দিক বা রাজ্য সেটা তাদের দেখার নেই। কিন্তু আগের সার্ভের তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের সকলকে ঘর দিতে হবে। নতুন করে সার্ভে করা যাবে না।
প্রশাসনের প্রতিনিধিদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান তারা। সেই বিক্ষোভে সামিল ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী থেকে শুরু করে সদস্য সকলেই এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। সার্ভের টিমকে গো ব্যাক স্লোগান দেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত প্রধান বাবলি খাতুনের স্বামী ফিরোজ হোসেনের দাবি এই সার্ভেতে যা শর্ত হয়েছে তাতে কেউ ঘর পাবে না। তাই আগের তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের ঘর দিতে হবে।
এই বিক্ষোভ শুধু তালসুর নয় পার্শ্ববর্তী সুলতাননগর, ইসলামপুর, সাদলিচক, দৌলতপুর সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়। এদিকে রাজ্য সরকারের প্রকল্পে তৃণমূল নেতাদের বিক্ষোভে ব্যাপক কটাক্ষের সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি এবং সিপিএমের অভিযোগ দুর্নীতির কারণে কেন্দ্র টাকা বন্ধ করে ছিল। তৃণমূল নেতারা বহু মানুষের কাছ থেকে ঘরের জন্য টাকা নিয়ে রেখেছে। তাই যখন তাদের সরকার ঘর দিতে চাইছে। সার্ভে করতে প্রতিনিধিদের পাঠাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।