ব্রিটিশ আমলের চন্দ্রকোনা পৌরসভায় এবার কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক ডাম্পিং গ্রাউন্ড

কার উদ্যোগ?

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-01-27 at 6.36.24 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর:ব্রিটিশ আমলের সময়কার স্থাপিত রাজ্যের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন চন্দ্রকোনা পৌরসভা।আবর্জনা ফলার জন্য এতোদিন ছিলনা কোনো ডাম্পিং গ্রাউন্ড,অন্যত্র আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সাফাই কর্মীদের।পৌরসভার দীর্ঘদিনের মুল সমস্যার সমাধান হতে চলেছে,তিন একর জায়গায় কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক ডাম্পিং গ্রাউন্ড।

১৮৬৯ সালের ১ লা এপ্রিল চন্দ্রকোনা পৌরসভার সূচনা হয়।জেলা ছাড়িয়েও রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন সবথেকে পুরানো পৌরসভা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই চন্দ্রকোনা পৌরসভা।ঐতিহ্যময় চন্দ্রকোনার পৌরানিক ও ঐতিহাসিক পরিচয় রয়েছে।বর্তমানে ১২ টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট চন্দ্রকোনা পৌরসভা।বহু পুরান ও প্রাচীন এই পৌরসভার শুরু থেকেই ছিলনা কোনো ডাম্পিং গ্রাউন্ড,পৌরসভার সবথেকে বড় এবং মুল সমস্যা ছিল ডাম্পিং গ্রাউন্ডের অভাব।যার জেরে বিভিন্ন সময় পৌরসভার নোংরা আবর্জনা অন্যত্র ফেলতে গিয়ে বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে।বর্তমানে চন্দ্রকোনা পৌরসভার তরফে ১২ টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি দুটি করে ভ্যাট দেওয়া হয়েছে,যত্রতত্র বাড়ির আবর্জনা না ফেলে পৌরসভার দেওয়া ভ্যাট বা বালতিতে জমা রাখতে হবে।প্রত্যহ সকালে সাফাই বিভাগের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করে।এছাড়াও পৌর এলাকার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান থেকে ছোটো বড়ো দোকানগুলিতেও এই ভ্যাট বিতরণ করা হয়েছে।পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়,জায়গায় জায়গায় পৌরসভার ভ্যাট বসানো রয়েছে নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য।শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পৌরসভা একাধিক উদ্যোগ নিলেও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সংগৃহিত এতো পরিমাণ নোংরা আবর্জনা পৌরসভা কোথায় ফেলবে।পৌর এলাকা থেকে আশপাশের এইসব আবর্জনা ফেলতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সাফাই বিভাগের কর্মীদের।অবশেষে দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে।চন্দ্রকোনা পৌরসভা সংলগ্ন চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়ায় ৩ একর জায়গায় ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে তৈরি হচ্ছে ডাম্পিং গ্রাউন্ড।পৌরসভার আবর্জনা নিয়ে গিয়ে খালি ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলা হবে তা নই,তৈরি হচ্ছে সুবিশাল সেড,বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট,কন্টোল রুম,অফিস রুম থেকে আনুষাঙ্গিক আরও পরিকাঠামোর কাজ।এছাড়াও ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আশপাশের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য তৈরি করা হয়েছে ঝা-চকচকে পিচ রাস্তা।চন্দ্রকোনা পৌরসভার আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্য পৌর নগর উন্নয়ন দপ্তরের আর্থিক অনুমোদনে পৌরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের কাজ চলছে জোরকদমে।চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা জানান,"আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের কাজ সম্পন্ন হয়ে তা উদ্বোধন করতে পারবো এমনটাই আশাবাদী,তার কাজ চলছে জোরকদমে।পৌরসভার দীর্ঘ দিনের মুল সমস্যার সমাধান হতে চলেছে।পৌরসভার আবর্জনা সংগ্রহের পর তা ফেলা নিয়ে সমস্যা তৈরি হতো,অন্য কোথাও ফেলতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হত।আমরা সেই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়ে SUDA তে আবেদন জানালে তা মঞ্জুর হয়।দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধান হতে চলায় খুশি পৌরবাসীও তারাও আবর্জনা ফেলা নিয়ে নানা অভিযোগ করতো।"বাড়ি বাড়ি হোক কিংবা বিভিন্ন দোকান ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে আবর্জনা ফেলার জন্য  পৌরসভার দেওয়া ভ্যাট বা বালতিতে তাদের জমানো আবর্জনা ফেলে এবং পৌরসভার সাফাই বিভাগের কর্মীরা তা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন পৌরবাসী থেকে ব্যবসায়ীরা।কিন্তু ডাম্পিং গ্রাউন্ডের অভাবে সেই আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে গিয়ে নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয় সাফাই কর্মীদের,যার জেরে নিয়মিত ভ্যাটভর্তি আবর্জনা সংগ্রহেও ভাটা পড়তো।ডাম্পিং গ্রাউন্ড হলে সুবিধা এবং ভালোই হবে,দীর্ঘ দিনের সমস্যার সমাধান হবে এমনটাই জানাচ্ছেন পৌরবাসী।ডাম্পিং গ্রাউন্ড হলে সেখানে স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী,কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হবে বলে পৌরসভা সূত্রে খবর।এককথায় প্রাচীন ও ব্রিটিশ আমলের সময়কার স্থাপনা হওয়া চন্দ্রকোনা পৌরসভার মুল সমস্যার সমাধান হতে চলেছে,খুশি পৌর বাসিন্দারা।