নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় পতিত জমিকে রাতারাতি দখল করে সেখানে গোপনে চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছিলেন একদল বাসিন্দা। খবর পেয়ে বনকর্মীরা গিয়ে বাধা দিতেই তাদের ওপর চড়াও লোকজন। থানায় অভিযোগ জানিয়ে চারটি রেঞ্জের বনাধিকারিক সহ বিশাল বাহিনী হাজির দখল হওয়া জমিতে। বাহিনীর বহর দেখেই ফেরার দখলদাররা। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার অন্তর্গত গোকুলপুর, পিরাকুলি এলাকায়। দখলদারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে ব্যবস্থা নিচ্ছে বনদপ্তর।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শালবনী থানার অন্তর্গত গোদাপিয়াশাল রেঞ্জের গোকুলপুর ও পিরাকুলি এলাকায় বনদপ্তরের জমি দখল করার চাষাবাদ শুরু করেছিল। প্রায় ৫০ হেক্টর জমি দখল করে গোপনে চাষ করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছিল। গত তিনদিন ধরে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই জঙ্গল লাগোয়া বনদপ্তরের জমির ওপর ট্রাক্টর দিয়ে হাল করা হচ্ছিল। জমি প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। বনদপ্তরের কর্মীরা খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একদল লোকজন ঐক্যবদ্ধ ভাবে চড়াও হয় ওই বনকর্মীদের ওপর। প্রহৃত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বনকর্মীরা সোজা শালবনী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে বনদপ্তরের মধ্যেও তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাতেই অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয় বনদপ্তর ও পুলিশের।
শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর বন বিভাগের গোদাপিয়াশাল, চন্দ্রকোণা, আড়াবাড়ি, ভাদুতলা রেঞ্জ যৌথভাবে বনকর্মীদের বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নেতৃত্বে ছিলেন বনদপ্তরের এডিএফও কানু চক্রবর্তী। বিশাল বাহিনী নিয়ে সেই জমির প্রান্তরে হাজির হলে ফেরার হয়ে যায় দখলদাররা। পুনরুদ্ধার করে বনদপ্তর সেই জমি। সেই সাথে স্থানীয় পাশাপাশি লোকজনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই জমিতে কেউ যেন চাষাবাদ করার চেষ্টা না করে। একইসঙ্গে দখল করা লোকদের চিহ্নিত করে আইনি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বনকর্তারা।
এডিএফও কানু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "ওই এলাকায় বনদপ্তরের জায়গায় চাষাবাদ শুরু করেছিল। খবর পেয়ে বনকর্মীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়। শালবনী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।" উল্লেখ্য, এর আগে মেদিনীপুর রেঞ্জে বনদপ্তরের জায়গায় পাকাপোক্ত নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই বাড়িও ভেঙে ফেলেছিল বনদপ্তর। চাঁদড়া রেঞ্জেও কৃষি কাজের জন্য ব্যবহার করা জমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে হাতির খাবারের জন্য ঘাস চাষ করা হয়েছে। তারপরও নতুন করে বন দপ্তরের জায়গা দখল করা নিয়ে শোরগোল পড়েছে। বনদপ্তর থেকে জানা গিয়েছে, বাড়ি নির্মাণ বা জমি তৈরি করে চাষাবাদ শুরু করা বন দপ্তরের জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে সর্বত্র।